ছ’বছর পর রাজীব কুমারের আগাম জামিন সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
দীর্ঘ ছ’বছর পর রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআই-এর মামলা সুপ্রিম কোর্টে। আজ, সোমবার শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। মূলত রাজীবের ২০১৯ সালের আগাম জামিনের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সোমবার প্রধান বিচারপতি বিআর গবই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে এই মামলাটি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মামলাটি শুনানির জন্য তালিকায় এক নম্বর স্থানে রয়েছে।
২০১৯ সালের ১ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্ট রাজীব কুমারের আগাম জামিন মঞ্জুর করে। তিন দিনের মধ্যে সিবিআই সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। শীর্ষ আদালত ওই বছর ৪ অক্টোবর মামলাটি গ্রহণ করে এবং ২৫ ও ২৯ নভেম্বর দুই দফায় শুনানি হয়। দ্বিতীয় শুনানির দিন রাজীবকে নোটিশ জারি করা হয়, এবং ২০ ডিসেম্বর তিনি শীর্ষ আদালতের নোটিস পান। এরপর এই মামলা সংক্রান্ত কিছু আবেদন জমা পড়ে আদালতে। কিন্তু দীর্ঘ ছ’বছরের মধ্যে মাত্র দু’বার শুনানি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজীব কুমার সারদা চিটফান্ড মামলার সময় রাজ্য সরকারের গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট মামলার তদন্তভার পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে সিবিআইকে দেয়। সিবিআই অভিযোগ করে যে, রাজীব তদন্তে সহযোগিতা করছেন না এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথি বিকৃত করেছেন। যদিও রাজীব এসব অভিযোগ নস্যাৎ করে জানিয়েছেন, তিনি তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। তিনি মেঘালয়ের শিলংয়ে পাঁচ দিনে মোট ৪০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেন এবং পরে কলকাতাতেও সিবিআই দপ্তরে গিয়ে হাজিরা দেন।
এরই মধ্যে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট রাজীবকে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দেয়। ওই বছর মে মাসে সেই রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কিন্তু আদালত জানায়, রাজীব চাইলে হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করতে পারেন। হাইকোর্ট রাজীবের আবেদন মঞ্জুর করে এবং নির্দেশ দেয়, সিবিআই তদন্তে সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। ৪৮ ঘণ্টা আগে নোটিস পেলে হাজিরা দিতে হবে। হাই কোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই।
সুপ্রিম কোর্টের এই শুনানি রাজীব কুমারের আগাম জামিনের বৈধতা এবং তদন্ত প্রক্রিয়ার উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।