পর্যাপ্ত জলের অভাবে বন্ধ হতে চলেছে তিন নামিদামি শপিং মল!
আজকাল | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দক্ষিণ দিল্লির বসন্ত কুঞ্জ অঞ্চলের তিনটি নামী ও অভিজাত শপিং মল—ডিএলএফ প্রোমেনেড, ডিএলএফ এম্পোরিও এবং অ্যাম্বিয়েন্স মল—অভূতপূর্ব জলসংকটে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাজধানীর বিলাসবহুল এই বিপণি কেন্দ্রগুলো, যেখানে প্রতিদিন হাজারো ক্রেতা, সেলিব্রিটি ও বিদেশি পর্যটক ভিড় জমান, এবার জলাভাবের কারণে কার্যক্রম বন্ধের মুখে।
গত কয়েক দিন ধরে দিল্লি জল বোর্ডের (ডিজেবি) তরফ থেকে নিয়মিত জল সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে ব্যাহত হয়েছে বলে মল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ট্যাঙ্কগুলো প্রায় শূন্য অবস্থায় পৌঁছেছে, যার ফলে প্রায় ৭০ শতাংশ শৌচাগার বন্ধ রাখতে হয়েছে। রেস্তোরাঁগুলোও মৌলিক স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করতে হিমশিম খাচ্ছে। থালা-বাসন ধোয়া থেকে শুরু করে গ্রাহকদের পানীয় জল সরবরাহ পর্যন্ত—সব ক্ষেত্রেই মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। এক রেস্তোরাঁর কর্মী জানিয়েছেন, “আমাদের কাছে এখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার মতো জলও নেই। এই অবস্থায় গ্রাহকদের সঠিকভাবে পরিষেবা দেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠছে।”
পরিস্থিতির এমন অবনতি ঘটেছে যে মল কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে—আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে যদি জল সরবরাহ স্বাভাবিক না হয়, তবে তাদের বাধ্য হয়ে সম্পূর্ণ কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। এতে শুধু ব্যবসায়িক ক্ষতিই হবে না, বরং হাজার হাজার কর্মচারীর জীবিকাও বিপন্ন হয়ে পড়বে। অনুমান করা হচ্ছে, একবার মল বন্ধ হয়ে গেলে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে।
এদিকে দিল্লি জল বোর্ড এখনো পর্যন্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সংকট আরও গভীর হতে পারে। প্রশাসনিক অচলাবস্থা ও অব্যবস্থাপনার কারণে রাজধানীর অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র এমন অবস্থায় পড়েছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, এই জলসংকট ঘটেছে দীপাবলির ঠিক কয়েক সপ্তাহ আগে—যে সময়টিতে সাধারণত শপিং মলগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় এবং বিক্রেতারা সারা বছরের সর্বোচ্চ বিক্রির প্রত্যাশা করেন। দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীদের মতে, এই সময়ে এমন সংকট মারাত্মক আঘাত হানবে তাদের আয়ে। এক দোকান ব্যবস্থাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা উৎসবের ভিড়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, কিন্তু এখন মৌলিক কাজ চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে।”
দক্ষিণ দিল্লির এই তিনটি বিলাসবহুল মল কেবল রাজধানীরই নয়, বরং ভারতের বাণিজ্য ও পর্যটনেরও গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। সেখানে জলসংকটের মতো মৌলিক সমস্যার কারণে ব্যবসা রুদ্ধ হয়ে পড়া শহরের প্রশাসনিক ব্যর্থতার এক কঠিন ইঙ্গিত দিচ্ছে। এখন সবার চোখ দিল্লি জল বোর্ডের দিকে, তারা কত দ্রুত এই সংকটের সমাধান করতে পারে, তার উপর নির্ভর করছে হাজারো কর্মীর ভবিষ্যৎ ও উৎসব-পূর্ব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি।