পদপিষ্টের পরিস্থিতি বর্ধমান স্টেশনে! ট্রেন ধরার হুড়োহুড়িতে জখম একাধিক যাত্রী, আহতদের দেখতে হাসপাতালে গেলেন বিধায়ক
আনন্দবাজার | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ট্রেন ধরতে গিয়ে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হল বর্ধমান স্টেশনে! ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে আহত হলেন একাধিক যাত্রী। তড়িঘড়ি তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতদের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। তবে রবিবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যাত্রীসুরক্ষা নিয়ে।
রবিবার সন্ধ্যা ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ বর্ধমান স্টেশনের ৪ ও ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানদার ভিকি রাউতের কথায়, ‘‘তখন ৪, ৬ ও ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ছিল। ৪ নম্বরে বর্ধমান-হাওড়া লোকাল, ৬-এ রামপুরহাট লোকাল আর ৭-এ আসানসোল লোকাল দাঁড়িয়েছিল। ট্রেন ধরতে গিয়ে হুড়োহুড়ি শুরু হয়।’’ অন্য প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার সিঁড়িটা এমনিতেই বেশ ছোট। তা ছাড়া, একই সময়ে রামপুরহাট, আসানসোল এবং হাওড়া যাওয়ার গাড়ি ঢোকায় যাত্রীদের ভিড়ও ছিল অস্বাভাবিক রকমের বেশি। ভিড়ের চাপে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। তার মাঝেই কয়েক জন পড়ে যান। তাঁদের উপর দিয়েই ট্রেন ধরার জন্য ছোটেন বাকিরা।
এক মহিলা সাফাইকর্মী জানাচ্ছেন, সে সময় একসঙ্গে তিনটি ট্রেন এসে পড়ার কারণেই এই বিপত্তি। আহত এক মহিলার স্বামী অরূপ দাস বলেন, ‘‘ট্রেনে ওঠানামার হুড়োহুড়িতে আমরা পড়ে যাই। আরও কিছু মানুষ ছিটকে পড়েন।’’ ঘটনার পরেই চাঞ্চল্য ছড়ায় রেল স্টেশন চত্বরে। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতদের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়েছেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস। রেলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
এ বিষয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত বলেন, ‘‘৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওভারব্রিজ থেকে নামতে গিয়ে পড়ে যান এক মহিলা। তার জেরেই সিঁড়িতে থাকা বাকিরাও পড়ে যান। খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে যান রেলের কর্মী ও আরপিএফ কর্মীরা। দু’জন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’’ যদিও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাত জন আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তবে এই ঘটনাকে ঘিরে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যাত্রীসুরক্ষা নিয়ে। দুর্ঘটনার পর বর্ধমান স্টেশনে গিয়েছেন হাওড়া শাখার ডিআরএম বিশাল কাপুর। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, কী ভাবে ওই ঘটনা ঘটল, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এমন পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে জন্য পদক্ষেপও করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।