দাগিরা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে শিক্ষাকর্মীদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে লেখা আছে। কিন্তু শিক্ষাকর্মীদের একাংশের আশঙ্কা, দাগি শিক্ষাকর্মীদের এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আটকানো গেলেও নবম থেকে দ্বাদশের ১৮০৪ জন দাগি চাকরিহারা শিক্ষক এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঢুকে পড়বেন না তো? প্রশ্ন উঠছে, দাগি শিক্ষকেরা অংশ নিলেও তাঁদের চিহ্নিতকরণের কোনও ব্যবস্থা কি স্কুল সার্ভিস কমিশনের আছে? চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের একাংশের দাবি, “এসএসসি জানিয়েছে, শিক্ষাকর্মীদের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে ৩ নভেম্বর। তার আগে দাগি শিক্ষাকর্মীদের তালিকা তারা প্রকাশ করবে। সেই তালিকা প্রকাশ করার সময় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হোক যে, এসএসসি তালিকা অনুযায়ী নবম থেকে দ্বাদশের দাগি ১৮০৪ জন শিক্ষকও আবেদন করতে পারবেন না। প্রয়োজনে তাঁদের নামের তালিকা আর এক বার প্রকাশিত হোক।”
চাকরিহারা এক শিক্ষাকর্মী অমিত মণ্ডল বলেন, “গ্রুপ সি-তে মোটে ২৯৮৯টি এবং গ্রুপ ডি-তে মোটে ৫৪৮৮টি শূন্য পদ রয়েছে। এসএসসি ২০১৬ সালে যে পরীক্ষা নিয়েছিল, তাতে প্রায় ১৯ লক্ষ শিক্ষাকর্মী পদের জন্য আবেদন করেন। ১০ বছর এসএসসি হয়নি। এ বার আবেদনের সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ হবে বলে অনুমান। এমনিতেই কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে চলেছি আমরা। এর মধ্যে দাগি ১৮০৪ জন শিক্ষকও আবেদন করে বসলে বিষয়টি নীতিসম্মত হবে বলে মনে করি না।” চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা দাগিদের নামের তালিকা প্রকাশ ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিক্ষাকর্মীদের নিয়োগ শেষ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। আজ, সোমবার এর শুনানি হওয়ার কথা।
দাগি শিক্ষকদের আবেদন করা আটকাতে কোনও নির্দেশিকা আলাদা করে জারি করা হবে কি না সেই নিয়ে মন্তব্য করেনি শিক্ষা দফতর। তবে শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “কেউ যদি নিজের নামের বানান অল্প পাল্টে দিয়ে শিক্ষাকর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করেন, তা হলে তা আবেদনের সময়ে কম্পিউটারের সিস্টেমে ধরা পড়া কিন্তু কার্যত অসম্ভব। তবে আবেদন করে কেউ লিখিত পরীক্ষায় পাশ করে গেলেও পরবর্তী পর্যায়ে বা ইন্টারভিউয়ের সময় নথি যাচাই প্রক্রিয়ায় ধরা পড়ে যাবেন।” তবে শিক্ষাকর্মীদের মতে, ইন্টারভিউয়ের সময়ে ধরা পড়ে লাভ কী? লিখিত পরীক্ষার আগেই দাগিদের চিহ্নিত করতে হবে।
নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় যাঁরা ৭ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর এসএসসি দিলেন তাঁদেরও অভিযোগ, দাগি ১৮০৪ জন শিক্ষক ওই পরীক্ষায় আবেদন করতে পারবেন না বলেছিল এসএসসি। কিন্তু যে-সব চাকরিহারা দাগি শিক্ষাকর্মী রয়েছেন এবং যাঁদের বিএড প্রশিক্ষণ রয়েছে তাঁরা শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা দিতে পারবেন কি না, কোনও নির্দেশিকায় বলেনি এসএসসি। ফলে দাগি শিক্ষাকর্মীরা শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসেছেন কি না তারও নিশ্চয়তা নেই।