বাংলাদেশে বন্দি বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা পরিযায়ী শ্রমিক সোনালি বিবি-সহ ছ’জনের ভারতে ফেরার ইতিবাচক সম্ভাবনা তৈরি হল। সোনালিদের সাহায্যের জন্য বাংলাদেশে যাওয়া বীরভূমের বাসিন্দা মফিজুল শেখ দাবি করেছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে বন্দি সোনালি-সহ বাকিদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছে ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন।
রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলামের প্রতিনিধি হিসাবে বাংলাদেশে গিয়েছেন মফিজুল। রবিবার তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ভারতীয় হাই কমিশন সোনালিদের মামলার গতিপ্রকৃতি, নথিপত্র ইত্যাদি বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেল কর্তৃপক্ষের কাছে খোঁজখবর করেছে।’’ তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার সোনালিদের বিরুদ্ধে কী-কী ধারা দিয়েছে, হাই কমিশনের তরফে সে তথ্য নেওয়া হয়েছে এবং নথির কপি পাঠাতেও বলা হয়েছে। মফিজুলের দাবি, ‘‘এটা ইতিবাচক।’’
সোনালি-সহ ছ’জনকে ক’দিন আগেই ভারতীয় বলে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের আদালত। সে দেশের আইন অনুযায়ী ‘পুশ ব্যাক’ করে ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনকে আদালতের নির্দেশের প্রতিলিপিও পাঠানো হয়েছিল বলে খবর। তার পরেই ভারতীয় হাই কমিশনের তরফে সোনালিদের খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁদের পরিজনেরা।
গত জুনে দিল্লিতে কর্মরত বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা, অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি, সুইটি বিবি-সহ ছ’জনকে বাংলাদেশি সন্দেহে অসম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করানোর অভিযোগ ওঠে। গত অগস্টে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর মডেল থানার পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গ্রেফতার করে। এখন তাঁরা সেখানকার সংশোধনাগারে রয়েছেন।
সোনালিদের পরিজনদের করা মামলার প্রেক্ষিতে গত মাসের ২৬ তারিখ কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, ছ’জনকেই চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফেরাতে হবে। তার পরেই সোনালিদের সাহায্যে বাংলাদেশে যান মফিজুল। তিনি জানান, সোনালিদের আইনজীবী এ বিষয়ে ভারতীয় হাই কমিশনকে বিষয়টি অবহিত করার আর্জি জানিয়েছিলেন। সে প্রেক্ষিতে আদালত ওই নির্দেশ দেয় বলে জানান মফিজুল। ২৩ অক্টোবর পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
সামিরুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের আদালতও সোনালিদের ফেরানোর প্রসঙ্গে নির্দেশ দিয়েছে এবং ভারতীয় হাই কমিশনকে জানাতে বলেছে। এটা সম্ভবত তারই প্রতিফলন।”