• সারদা মামলায় ৬ বছরে জিজ্ঞাসাবাদও নয় রাজীবকে, CBI-এর ভূমিকায় প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
    এই সময় | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • সারদা মামলায় রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের জামিন খারিজ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে সিবিআই। হাইকোর্টে জামিন দিয়েছিল রাজীবকে। সুপ্রিম কোর্ট সোমবার প্রশ্ন তুলল, ৬ বছর ধরে কেন একবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি রাজীব কুমারকে?

    সোমবার প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে ওই মামলাটি শুনানি হয়। এ দিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘কেন গত ছয় বছরে সিবিআই রাজীব কুমারকে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ করেনি?’ গোটা ঘটনাপ্রবাহ ‘শকিং’, পর্যবেক্ষণ প্রধান বিচারপতির।

    যদিও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা পাল্টা আদালতে বলেন, ‘মামলার বিস্তারিত নথি দেখলে অবাক হতে হবে।’ রাজীব কুমারের আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেব এ দিন আদালতে বলেন, ‘দক্ষ আইপিএস অফিসারকে হেনস্থা করা হচ্ছে। তাঁর সম্মানহানি করা হচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে।’ সুপ্রিম কোর্ট এ দিন জানায়, শুক্রবার মামলাটির পূর্ণাঙ্গ শুনানি করবে সুপ্রিম কোর্ট। ওই দিনই শুনানি হবে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের দায়ের করা আদালত অবমাননার মামলারও।

    উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের গঠন করা বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) প্রথম সারদা চিটফান্ডের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছিল। সেই দলের সদস্য ছিলেন বিধাননগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই মামলাটির তদন্তভার যায় সিবিআই-এর হাতে। তদন্তে নেমে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিযোগ তুলেছিল, রাজীব তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। যদিও সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছিলেন রাজীব। কিন্তু এর পরে রাজীবকে হেফাজতে চেয়ে পদক্ষেপ করতে শুরু করে সিবিআই।

    এর পরে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে রাজীব কুমারকে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচও দিয়েছিল। যদিও সেই বছরেই মে মাসে তা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এর পরে আগাম জামিন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজীব কুমার। সেই সময়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শহিদুল্লাহ মুন্সি এবং বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল সিবিআই। পাশাপাশি রাজীবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলেও একটি মামলা করে সিবিআই।

    ছয় বছর পরে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ওঠে সেই মামলাই। এ দিন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ছয় বছর আগে আগাম জামিন দেওয়া হয়েছিল। তা রদ করা হয়নি। ছয় বছর পরে আমরা আগাম জামিন কী ভাবে বাতিল করব? এর মধ্যে আপনারা (সিবিআই) ওঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেননি।’ পাল্টা তুষার মেহতা বলেন, ‘শুধু আগাম জামিনের মামলা নয়। এর সঙ্গে আদালত অবমাননার মামলাও রয়েছে। একসঙ্গে দু’টি মামলার শুনানি করা হোক। মামলা দু’টি পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।’

    রাজীব কুমারের আইনজীবী পাল্টা আদালতে বলেন, ‘ছয় বছরে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। এই মামলা করা হয়েছে হেনস্থা ও সম্মানহানির জন্য।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ছয় বছর ধরে এই মামলাটি পড়ে রয়েছে। আপনারা কোনও স্টেপ নেননি এই সময়ে।’ এই বিষয়টি অবাক করার মতো, উল্লেখ করেন তিনি। যদিও পাল্টা তুষার মেহতা দাবি করেন, ‘তিনবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে রাজীব কুমারকে।’

  • Link to this news (এই সময়)