• রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতার 'বিষ' রুখতে আরএসএস-কে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা! প্রতিবাদে দক্ষিণপন্থীরা ...
    আজকাল | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্‌ণাটক সরকার শিগগিরই এমন একটি সরকারি আদেশ জারি করতে চলেছে, যেখানে বলা হবে—যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান সরকার দ্বারা পরিচালিত, আর্থিকভাবে সাহায্যপ্রাপ্ত বা সরকারি মালিকানাধীন, সেখানে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর কার্যকলাপ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।

    মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এই নির্দেশ দেন তাঁর মন্ত্রিসভার এক সদস্য প্রিয়াঙ্ক খাড়গের চিঠির প্রেক্ষিতে। গত ৪ অক্টোবর গ্রামীণ উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি ও বায়োটেকনোলজি দপ্তরের মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খাড়গে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে অনুরোধ করেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে আরএসএস কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার জন্য। তাঁর যুক্তি—এই সংগঠন সংবিধানবিরোধী ও বিভাজনমূলক আদর্শ প্রচার করে।

    রবিবার, ১২ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর  (CMO) সেই চিঠির কপি প্রকাশ করে এবং জানায় যে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে "উপযুক্ত ব্যবস্থা" নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

    প্রিয়াঙ্ক খাড়গে রবিবার সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আরএসএসের দর্শন বিষাক্ত। এটি সমাজের কারও উপকার করে না। যদি তাদের দর্শন এতই ভালো হত, তবে বিজেপি নেতারাই তো তাঁদের সন্তানদের আরএসএস শাখায় পাঠাতেন! কতজন বিজেপি নেতার সন্তান গনবেশ পরেন, ত্রিশূল দীক্ষা নেন বা নিয়মিত শাখায় যোগ দেন? তাঁদের অধিকাংশই বিদেশে বসবাস করছেন।”

    তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। কখনও কি তাঁকে আরএসএসের পোশাকে দেখা গেছে? আসলে আরএসএস দরিদ্র, তফসিলি জাতি, উপজাতি ও পিছিয়ে পড়া মানুষের মগজধোলাই করতে চায়।”

    খাড়গে আরএসএসের জনসংখ্যা বৃদ্ধির যুক্তিকেও ব্যঙ্গ করে বলেন, “তাঁরা বলেন হিন্দুরা বিপদে আছে, তাই বেশি সন্তান জন্ম দিতে হবে। কিন্তু আরএসএস নেতারাই তো অবিবাহিত! তাঁরা নিজেরাই যদি এত ধর্মরক্ষার কথা বলেন, তাহলে কেন বিবাহ করে তাঁদের সন্তানদের ধর্মরক্ষক বা গোরক্ষক বানাচ্ছেন না?”

    তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আরএসএসের রুট মার্চে লাঠি বহনের প্রয়োজন কী? এই প্রদর্শনমূলক আগ্রাসন সমাজে ভয় ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।”

    উল্লেখ্য, রবিবার আরএসএস তাদের শতবর্ষ উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে সারা দেশে রুট মার্চের আয়োজন করে। বেঙ্গালুরুতেও প্রায় ১০০টি রুট মার্চের পরিকল্পনা ছিল বলে জানা গেছে। এর মধ্যে দুটি প্রধান মিছিল শুরু হয়েছিল সরকারি জায়গা থেকে—একটি বৃহৎ বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকায় (BBMP) পরিচালিত একটি মেয়েদের স্কুলের মাঠ থেকে, অন্যটি রাজাজিনগরের সুব্রহ্মণ্য নগরে একটি BBMP খেলার মাঠ থেকে।

    প্রিয়াঙ্ক খাড়গে তাঁর চিঠিতে লেখেন, “আরএসএস এমন ধারণা ছড়াচ্ছে যা ভারতের ঐক্য ও সংবিধানের ভাবনার পরিপন্থী। অনুমতি ছাড়া লাঠি নিয়ে প্রদর্শনমূলক মিছিল শিশু ও তরুণদের মনে মানসিক প্রভাব ফেলে।”

    তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন, আরএসএসকে যেন কোনো সরকারি স্কুল, পার্ক, সরকারি খেলার মাঠ, মন্দির (মুজরাই দপ্তরের অধীনে), প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সাইট বা অন্য কোনো সরকারি প্রাঙ্গণে কার্যক্রম পরিচালনা করতে না দেওয়া হয়। সরকারি মহল সূত্রে জানা গেছে, এই নির্দেশিকার খসড়া তৈরি হচ্ছে, এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তা আনুষ্ঠানিকভাবে জারি হতে পারে।
  • Link to this news (আজকাল)