সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটার তালিকায় বিরাট কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। তবে আদালতে গুরুত্ব পেল না আর্জি। সোমবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ জানিয়ে দিল, ”যেখানে খুশি যান। এখানে এই মামলা শোনা হবে না।” একইসঙ্গে বেঞ্চ জানিয়েছে মামলাকারী চাইলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে পারেন।
গত ৭ আগস্ট সাংবাদিক বৈঠক করে কার্যত অ্যাটম বোমা ফাটিয়েছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। অভিযোগ করেন, ২০২৪ লোকসভা থেকে নির্বাচন কমিশন ও বিজেপির আঁতাঁতের মাধ্যমে বিরাট ভোট জালিয়াতি চলছে। তাঁর অভিযোগ, ক্ষমতায় থাকার জন্য ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ২৫টি আসনে ভোট চুরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই ২৫টি কেন্দ্রেই হারজিতের ব্যবধান ৩৩ হাজারের কম। শুধু তাই নয়, কর্নাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভার ভোটার লিস্ট তুলে ধরে কংগ্রেস সাংসদ দাবি করেন, স্রেফ এই একটি কেন্দ্রেই ১ লক্ষের বেশি ভোট চুরি হয়েছে। এর মধ্যে ডুপ্লিকেট ভোটার ১১,৯৬৫, ভুয়ো ভোটার ৪০,০০৯, এক ঠিকানায় একাধিক ভোটার ১০,৪৫২, ভুল ছবি রয়েছে ৪,১৩২, ফর্ম ৬ এর অপব্যবহার করেছেন ৩৩,৬৯২ ভোটার। রাহুলের সেই অভিযোগের পর শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশে।
এই ইস্যুতেই শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন রোহিত পাণ্ডে নামে এক ব্যক্তি। যেখানে মামলাকারীর আবেদন ছিল, এই মামলায় বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্ত হোক। তাঁর আরও দাবি, বিষয়টি নিয়ে তিনি স্বাধীনভাবে অনুসন্ধান করেছেন। তাতে কারচুপির বিষয়টি উঠে এসেছে। এর পালটা আবেদনকারীকে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় আদালতের তরফে। তবে মামলাকারী বলেন, তিনি কমিশনে বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে তাঁরা কোনও পদক্ষেপ করেনি। মামলাকারীর তরফে আর্জি জানানো হয়, এ বিষয়ে কমিশনকে পদক্ষেপ করার জন্য সময় বেঁধে দিক আদালত। তবে সে আর্জিতেও সাড়া দেয়নি শীর্ষ আদালত। ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, “আমরা আবেদনকারীর কথা শুনেছি। তবে মামলাটি জনস্বার্থ আকারে দায়ের হওয়ায় এই মামলা শুনতে ইচ্ছুক নই। আবেদনকারী চাইলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে পারেন।”
উল্লেখ্য, রাহুলের তরফে ভোটচুরির অভিযোগ একেবারেই ভালোভাবে নেয়নি নির্বাচন কমিশন। কর্নাটকের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, রাহুল গান্ধী যেসব অভিযোগ করেছেন সেগুলি গুরুতর। এ বিষয়ে কংগ্রেস যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ কমিশনের হাতে তুলে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, “হয় এই অভিযোগপত্র জমা করুন নাহয় দেশের জনতাকে বিভ্রান্ত করা বন্ধ করুন।” পাশাপাশি ১৭ আগস্ট মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার এক সপ্তাহের মধ্যে রাহুলকে হলফনামা জমার নির্দেশ দেন।