'মহিলাদের গভীর রাতে বাইরে যাওয়া উচিত নয়', এবার বিতর্কিত মন্তব্য সৌগত রায়ের
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ গণধর্ষণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা। আর সেই বিতর্কের মধ্যেই এবার ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের আরও এক নেতা সৌগত রায়। তিনি দাবি করেছেন, মহিলাদের গভীর রাতে বাইরে বেরোনো উচিত নয় এবং পুলিশ 'প্রতি ইঞ্চিতে' সুরক্ষা দিতে পারে না। মেডিক্যাল কলেজের এক ছাত্রীর ধর্ষণ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরপরই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি নারীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। সৌগত বলেন, 'বাংলায় এই ধরনের ঘটনা বিরল। বাংলায় নারীদের নিরাপত্তা অন্য যেকোনও রাজ্যের চেয়ে ভালো। তবে মহিলাদের গভীর রাতে কলেজ ছেড়ে যাওয়া উচিত নয় কারণ পুলিশ সর্বত্র টহল দিতে পারে না।'
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'ওটি একটি প্রাইভেট কলেজ। মেয়েটির নিরাপত্তার দায়িত্ব তো সেই প্রাইভেট কলেজেরই। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ কীভাবে মেয়েটি ক্যাম্পাসের বাইরে গেল। জঙ্গল এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে বলে শুনেছি। কী হয়েছে জানি না। পুলিশ খতিয়ে দেখছে। বেসরকারি কলেজগুলির উচিত নিরাপত্তা আরও জোরদার করা। বিশেষ করে ছাত্রীদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা উচিত। রাতে তাদের বাইরে বেরোতে দেওয়া উচিত নয়। পুলিশ কীভাবে জানবে রাতে কখন কে বেরোবে। বিভিন্ন রাজ্যের ছেলেমেয়েদের অনুরোধ করব রাতে যেন তাঁরা না বেরোয়। বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজেরও একটা দায়িত্ব আছে। কেউ যদি রাত সাড়ে ১২টায় কোথাও যায়, পুলিশ তো আর তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বসে থাকবে না।'
মমতার এই মন্তব্য নিয়েই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এদিকে দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ার গণধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত। এদিকে ধৃতদের মধ্যে দুর্গাপুর পুরনিগমের এক অস্থায়ী কর্মীও আছে। এই ঘটনায় মোট পাঁচ জন যুক্ত ছিল বলে জানা গিয়েছে। এখনও পঞ্চম অভিযুক্তের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্যাতিতা তরুণী ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা। তরুণীর পরিবার জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওই পড়ুয়া সহপাঠীদের সঙ্গে কলেজের বাইরে খেতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় কয়েকজন যুবক ওই তরুণীর পথ আটকায় এবং জোর করে হাসপাতালের পিছনের দিকে থাকা একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। এদিকে দুষ্কৃতীদের তাড়া খেয়ে তরুণীর সঙ্গে থাকা বন্ধুটি পালিয়ে যান বলে জানা যায়। এদিকে গণধর্ষণ করার পর ডাক্তারি পড়ুয়ার মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। এদিকে ঘটনায় নির্যাতিতার সহপাঠীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার। অভিযোগ, ওই বন্ধুই তাঁকে বাইরে যেতে বাধ্য় করেছিলেন। অভিযুক্ত এই সহপাঠীকে আটক করে জেরা করে পুলিশ।