• কুমারী মেয়ের সঙ্গে সঙ্গম করলেই সেরে যাবে মানসিক রোগ! মহীশূরে কুসংস্কারের বলি একের পর এক নাবালিকা
    আজকাল | ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: নাবালিকাদের দেহ ব্যবসায় নামিয়ে 'কুমারী' যৌনচক্র চালানোর অভিযোগ। রবিবার কর্নাটকের মহীশূর সিটি পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রের পর্দাফাঁস করেছে তারা। তদন্তে জানা গিয়েছে, নাবালিকাদের সঙ্গে যৌন সংসর্গের ব্যবস্থা করে দেওয়ার বিনিময়ে অভিযুক্তরা নগদ ২০ লক্ষ টাকা নিত। ভয়াবহ এই ঘটনা জানাজানি হতেই হুলুস্থুল। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, 'ওদানাদি সেবা সংস্থা' নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ফাঁদ পাতে পুলিশ। সেই অভিযানেই বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা শোভা এবং তার সঙ্গী তুলসী কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এই চক্রের নেপথ্যে রয়েছে এক গভীর কুসংস্কার। অনেকের বিশ্বাস, কুমারী মেয়ের সঙ্গে যৌন মিলনে নাকি বিভিন্ন মানসিক রোগ সেরে যায়। আর এই অন্ধবিশ্বাসকেই পুঁজি করে রমরমিয়ে চলছিল এই যৌনচক্র।

    এই চক্রের পর্দাফাঁস হয় যখন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'ওদানাদি'-র কাছে খবর আসে যে, শোভা নামে এক মহিলা এই ধরনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন খদ্দের খুঁজছে। সংস্থার কর্মীরা জানতে পারেন, ১২-১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীর ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন খদ্দেরদের দেখানো হচ্ছে। এরপরেই তাঁরা দ্রুত পদক্ষেপ করেন এবং পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সতর্ক করেন।

    এক স্বেচ্ছাসেবী কর্মী খদ্দের সেজে শোভার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার বিশ্বাস অর্জন করেন। তিনি নাবালিকাকে মহীশূরে নিয়ে আসতে বলেন। শোভা রাজিও হয়ে যায় এবং জানায়, শনিবার দুপুর ২টোর মধ্যে সে চলে আসবে। এরপর 'ওদানাদি'-র প্রতিষ্ঠাতা কে ভি স্ট্যানলি এবং এম এল পরশুরাম বিজয়নগর থানার পুলিশের সঙ্গে মিলে বিজয়নগরের সরকারি বালিকা হোমসের কাছে একটি নিশ্ছিদ্র ফাঁদ পাতেন।

    নির্দিষ্ট সময়ে মেয়েটিকে নিয়ে সেখানে হাজির হয় অভিযুক্ত শোভা। তার সঙ্গে এক পুরুষ সঙ্গীও ছিল, যে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছিল। 'ওদানাদি'-র সদস্যরা একটি গাড়িতে এসে দর কষাকষি শুরু করতেই পুলিশ এলাকাটি ঘিরে ফেলে।

    পুলিশ জানিয়েছে, শোভা ২০ লক্ষ টাকা দাবি করে এবং মেয়েটির পরিচয় নিয়ে বারবার বয়ান বদল করতে থাকে। প্রথমে সে মেয়েটিকে নিজের মেয়ে বলে দাবি করে, তারপর বলে ভাইঝি, এবং শেষে জানায় সে তার দত্তক কন্যা। অবশেষে, জেরার মুখে সে যৌনচক্রে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তার সঙ্গে থাকা পুরুষটি নিজেকে শোভার স্বামী তুলসী কুমার বলে পরিচয় দেয়।

    ষষ্ঠ শ্রেণির ওই পড়ুয়াকে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং পরে একটি হোমে পাঠায়। শোভা ও তুলসী কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত অভিযুক্তদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে। বিজয়নগর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। বর্তমানে মেয়েটির পরিচয় ও সে কীভাবে শোভার সংস্পর্শে এল, তা জানতে পুলিশ আরও তদন্ত চালাচ্ছে।
  • Link to this news (আজকাল)