• রাতের অন্ধকারে ঘরে ঢুকে পড়ল আট ফুট লম্বা প্রাণী, অন্যদের বাঁচাতে তাকেই কাঁধে তুলে নিলেন ব্যক্তি, তারপর......
    আজকাল | ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোটার ইটাওয়া এলাকার বানজারি গ্রাম। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ না গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামের মধ্যে বিশালাকার কুমির দেখতে পান। দেখার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। জানা গিয়েছে, প্রায়  আট ফুট লম্বা ওই কুমিরের ওজন ৮০ কেজি। গ্রামের একটি ঘরের উঠোনে ঢুকে পড়ে কুমির। আতঙ্কিত পরিবারটি সাহায্যের জন্য চিৎকার করায় পড়শিরা জড়ো হন। গ্রামবাসীরা তাৎক্ষণিকভাবে বন বিভাগকে খবর দেন। কিন্তু সময়মতো কোনও কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে না পৌঁছনোয় স্থানীয় বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ হায়াত খানের কাছে যান গ্রামবাসীরা। তিনি স্থানীয় এলাকায় 'বাঘ' নামে পরিচিত।

     হায়াত এবং তাঁর দল তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অন্ধকারে উদ্ধারকার্য শুরু করে।  সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্ধার পরবর্তী একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, হায়াত সিনেমার নায়কের মতো কুমিরটি উদ্ধার করে কাঁধে বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। নিরাপত্তার জন্য, সরীসৃপটির মুখ এবং পা টেপ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল, যাতে সেটি উদ্ধারকারীদের আঘাত করতে না পারে। 

    সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে খবর, গ্রামের বাসিন্দারা যখন আতঙ্কে কাঁটা হয়ে ছিলেন কুমিরের ভয়ে, তখন হায়াত এবং তাঁর দল যেভাবে ওই প্রাণীকে উদ্ধার করে, সকলকে বিপদ থেকে বাঁচিয়েছেন, তা গ্রামবাসীদের কাছে সিনেমার মতো। কেমন ছিল উদ্ধারকার্য? প্রথমে কুমিরটির মুখ টেপ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়, যাতে সেটি উদ্ধারকারীদের আক্রমণ করতে না পারে। তারপর তার সামনের এবং পিছনের পা দড়ি দিয়ে বেঁধে সাবধানে ঘর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। 

    প্রায় একঘণ্টা ধরে চলে উদ্ধার অভিযান। রাত এগারোটা নাগাদ উদ্ধার শেষ হলে, পরের দিন সকালে, দলটি গেটা এলাকার কাছে চম্বল নদীতে কুমিরটিকে নিরাপদে ছেড়ে দেয়। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা হায়াত খানের নির্ভীক কাজের প্রশংসা করেছেন। কমেন্ট করে জানিয়েছেন নিজেদের মতামত। পোস্টের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'প্রত্যেক প্রাণীপ্রেমীর জন্য সত্যিকারের অনুপ্রেরণা।' আরেকজন শেয়ার করেছেন, লিখেছেন, ডিসকভারি চ্যানেল দ্বারা অনুপ্রাণিত। একজন আবার লিখেছেন, 'গঙ্গা যমুনা সরস্বতী সিনেমার আসল অমিতাভ বচ্চন।' একজন লিখেছেন, 'রাজস্থান বিগিনারদের জন্য নয় আসলে।' একজন আবার লিখেছেন, 'এই জন্য মেয়েরা বেশি দিন বাঁচেন।' 

    ঘটনার পর, একজন আবার লিখেছেন, গ্রামগুলিতে ঘরের আশেপাশে, পাড়ার মাঝখানে যেসব বড় পুকুরগুলি রয়েছে, কোনদিন সেখানেই পাওয়া যাবে কুমির। পুকুরেই কুমির রয়েছে বলেও অনেকেই আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন। গ্রামবাসীরা বলছেন, 'কাছাকাছি একটি পুকুর অসংখ্য কুমিরের আবাসস্থল হয়ে উঠেছে, যার ফলে প্রায় এক বছর ধরে এটি ব্যবহার করার নিরাপদ নয়। আক্রমণের ভয়ে মানুষ ওই পুকুরে নামতেই পারেন না।' অনেক বাসিন্দা বলছেন যে, তাঁরা পুকুরের কাছেও যেতে পারছেন না। তাঁরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন। 
  • Link to this news (আজকাল)