• বিমানবন্দরে বিভীষিকা! ব্যাঙ্কক ফেরত যাত্রীর ব্যাগ খুলতেই কিলবিল করে বেরল সাপ, গিরগিটি-সহ ৬১টি বিরল প্রাণী...
    আজকাল | ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: শনিবার মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ভারতীয় যাত্রীর ব্যাগ থেকে ৬১টি বিরল বন্যপ্রাণী উদ্ধার করল শুল্ক দফতর। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিমানবন্দর জুড়ে। বিমানবন্দরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ওই যাত্রী ব্যাঙ্কক থেকে ফিরছিলেন।

    সূত্রের খবর, শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের ওই ব্যক্তির আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় তাঁর ব্যাগপত্র বিস্তারিত ভাবে তল্লাশি করা হয়। আর তাতেই চক্ষু চড়কগাছ! দেখা যায়, ব্যাগের ভিতর ঠাসাঠাসি করে ভরে রাখা হয়েছে একাধিক জীবন্ত বন্যপ্রাণী। সঙ্গে সঙ্গে ৬১টি প্রাণীকেই উদ্ধার করে ‘রেসকিউ অ্যাসোসিয়েশন ফর ওয়াইল্ডলাইফ ওয়েলফেয়ার’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই তাদের চিকিৎসা এবং পরিচর্যা চলছে।

    এই বিষয়ে মুম্বই বিমানবন্দরের আধিকারিকেরা জানান, উদ্ধার হওয়া প্রাণীদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিপন্ন প্রজাতির স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ, উভচর এবং পতঙ্গ রয়েছে। এর মধ্যে ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট তেগু, কাসকাস, সেন্ট্রাল বেয়ার্ডেড ড্রাগন এবং হন্ডুরান মিল্ক স্নেক উল্লেখযোগ্য। প্রাণীগুলি আপাতত চিকিৎসাধীন। সুস্থ হলে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেই খবর।

    শুল্ক দফতরের তরফ থেকে গোটা বিষয়টি ইতিমধ্যেই ‘বন্যপ্রাণ অপরাধ দমন শাখা’-কে জানানো হয়েছে। কী ভাবে এই প্রাণীগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং কোথায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ধৃত যাত্রীর বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইন এবং বিপন্ন প্রজাতির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত সনদ-এর আওতায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃত ব্যক্তি ব্যক্তিগত সংগ্রহের জন্য প্রাণীগুলিকে নিয়ে এসেছেন নাকি এর মধ্যে বৃহত্তর কোনও পশু চোরাচালান কারবারের যোগ রয়েছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেই বিষয়টিও।

    স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘রেসকিউ অ্যাসোসিয়েশন ফর ওয়াইল্ডলাইফ ওয়েলফেয়ার’-এর অধিকর্তা পবন শর্মা বলেন, “থাইল্যান্ড এখন বন্যপ্রাণ পাচারের একটি বড় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এর মূল কারণ সেখানে বহু অদ্ভুতদর্শন প্রাণী পাওয়া যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রাণী বিক্রি করা বা কেনা আইনত বৈধ। ব্যাঙ্কক থেকে সরাসরি এবং সস্তার বিমান পরিষেবা থাকায় পাচারকারীদের পক্ষে ভারতে এই ধরনের প্রাণী নিয়ে আসা সহজ হয়ে গিয়েছে।”

    প্রসঙ্গত, ভারতে বন্যপ্রাণী পাচার একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। বেআইনি ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বন্যপ্রাণী এবং পাখি ধরা, বিক্রি বা পাচার করাও গুরুতর অপরাধ। তাই ধরা পড়ার ভয়ে প্রায়শই পাচারকারীরা প্রাণীগুলিকে ছোট পরিসরে গাদাগাদি করে লুকিয়ে রাখে। এর ফলে বহুক্ষেত্রে তীব্র যন্ত্রণা সইতে হয় অবলা প্রাণীদের। অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যুও ঘটে। এই ঘটনা সেই ক্রুরুতার ছবিটি আবার স্পষ্ট করে দিল বলেই দাবি পশুপ্রেমীদের।
  • Link to this news (আজকাল)