• দেশে ১ লক্ষেরও বেশি স্কুলে মাত্র একজন শিক্ষক! শিক্ষামন্ত্রকের রিপোর্টে প্রকাশ্যে ‘দৈন্যদশা’
    প্রতিদিন | ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের এক লক্ষের বেশি স্কুলে শিক্ষক মাত্র এক জন করে। ৩৩ লক্ষের বেশি পড়ুয়া একজন শিক্ষকের উপর নির্ভরশীল। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল এই ছবিটাই এবার ধরা পড়ল খোদ কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের রিপোর্টে। এই তালিকায় সবচেয়ে বেহাল অবস্থা অন্ধ্রপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশে।

    শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী প্রাথমিকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৩০ জন পড়ুয়া পিছু ন্যূনতম একজন করে শিক্ষক থাকা উচিত। উচ্চপ্রাথমিকে অর্থাৎ ষষ্ট শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৫ জন পড়ুয়া পিছু ন্যূনতম একজন করে শিক্ষক থাকা উচিত। অথচ বাস্তবে খোদ কেন্দ্রের রিপোর্ট বলছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে দেশে মোট ১ লক্ষ ৪ হাজার ১২৫টি স্কুলে রয়েছেন মাত্র একজন করে শিক্ষক। এই সব স্কুলে পড়ুয়ার মোট সংখ্যা ৩৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ৭৬৯ জন। অর্থাৎ প্রতিটি স্কুলে গড়ে ৩৪ জন পড়ুয়া পড়াশুনো করে। রিপোর্ট বলছে, এই ধরনের স্কুলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশে। এবং একজন শিক্ষক বিশিষ্ট স্কুলে সবচেয়ে বেশি পড়ুয়ার সংখ্যা উত্তরপ্রদেশে। এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটকে।

    কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, অন্ধ্রপ্রদেশে এই ধরনের স্কুলের সংখ্যা ১২,৯১১টি। উত্তরপ্রদেশে ৯,৫০৮টি, ঝাড়খণ্ডে ৯,১৭২টি, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক এবং পশ্চিমবঙ্গে এই সংখ্যাটা যথাক্রমে ৮১৫২, ৭৩৪৯, ৬৪৮২টি। এছাড়া রাজস্থানে ৬,১১৭টি, ছত্তিশগড়ে ৫,৯৭৩টি, তেলেঙ্গানায় ৫,০০১টি। এক বিশিষ্ট স্কুলে পড়ুয়ার নিরিখে সবার উপরে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। সেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা ৬ লক্ষ ২৪ হাজার ৩২৭জন। এরপর যথাক্রমে রয়েছে, ঝাড়খণ্ড (৪.৩৬ লক্ষ), পশ্চিমবঙ্গ (২.৩৫ লক্ষ), মধ্যপ্রদেশ (২.২৯ লক্ষ), কর্নাটক (২.২৩ লক্ষ), অন্ধ্রপ্রদেশ (১.৭৭ লক্ষ) ও রাজস্থান (১.৭২ লক্ষ)।

    বেহাল অবস্থা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলিতেও। দিল্লিতে এই ধরনের স্কুলের সংখ্যা ৯টি, আন্দামান ও নিকবোর দ্বীপপুঞ্জে রয়েছে ৪টি স্কুল। ৯টি স্কুল হলেও স্কুলে গড় ছাত্রসংখ্যার নিরিখে দিল্লি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। গড় ছাত্রের নিরিখে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সবার উপরে রয়েছে চণ্ডীগড়। এখানে এই ধরনের স্কুলে গড়ে ১,২২২ জন পড়ুয়া ভর্তি। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে এই ধরনের স্কুলের সংখ্যা দেশে আগের চেয়ে কমেছে। ২০২২-২৩ সালে দেশে এমন স্কুলের সংখ্যা ছিল ১,১৮,১৯০টি। ২০২৩-২৪ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১,১০,৯৭১টি। চলতি শিক্ষাবর্ষে তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে ১,০৪,১২৫টি।

    এই বেহাল অবস্থা সামাল দিতে সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রকের এক ঊর্ধ্বতন কর্তা। তিনি জানান, যেসব স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কম সেইসব স্কুলগুলিকে একত্রিত করে দেওয়া হচ্ছে। সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীবিহীন স্কুলের শিক্ষকদের একজন করে শিক্ষক থাকা স্কুলে নিয়োগ করছে সরকার। যাতে পড়ুয়ারা সঠিক শিক্ষা পায়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)