‘দুঃখজনক, ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে কিছু ব্যবস্থার প্রয়োজন’! বর্ধমান স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় বলল রেল
আনন্দবাজার | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন ধরার জন্য হুড়োহুড়ি। আর সেই থেকে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয় রবিবার। সেই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ বলে জানাল পূর্ব রেল। শুধু তা-ই নয়, ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মিলিন্দ দেউস্কর।
রবিবার সন্ধ্যা ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ বর্ধমান স্টেশনের ৪ ও ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে ঘটনাটি ঘটে। ট্রেন ধরতে গিয়ে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয় স্টেশনে। ঘটনায় বেশ কয়েক জন যাত্রী আহত হন। সেই ঘটনার পর সোমবার বিকেলে বর্ধমান স্টেশন পরিদর্শনে আসেন মিলিন্দ। তার পরে তিনি জানান, রবিবার সন্ধ্যার ঘটনায় আট জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের আঘাত গুরুতর। হাওড়ার হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। রেলের নিয়ম অনুযায়ী দুর্ঘটনায় আহতদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
বর্ধমান স্টেশন পরিদর্শন করে পূর্ব রেলের জিএম বলেন, ‘‘ভিড় নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। এই স্টেশন খুব পুরনো। এত যাত্রীর জন্য তৈরি ছিল না। এখানে ১৬৭টি ট্রেন চলে।’’ মিলিন্দের কথায়, ‘‘এই স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলি খুব একটা চওড়া নয়। স্টেশনের সিঁড়িগুলি আর চওড়া করার উপায় নেই।’’ তবে তার পরেও কী ভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা করা যায়, তার আভাস দেন মিলিন্দ। তিনি জানান, স্টেশনের ফুটব্রিজ আরও বাড়ছে। এ ছাড়াও, ৬ এবং ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মও বহরে আরও বাড়বে। ৬ মাসের মধ্যে বাড়ানো হবে ইয়ার্ডও।
তিনি আরও জানান, সাত-আট দিনের মধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি করার চেষ্টা চলছে। পাঁচ সদ্যস্যের একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। তাতে বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকেরা রয়েছেন। তবে তিনি এ-ও জানান, প্রাথমিক ভাবে এখনও পর্যন্ত গাফিলতির কোনও তথ্য সামনে আসেনি। তবে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্টেশনে কেউ আহত হলে দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা যাতে করা যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।
রবিবারের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানদার বলেন, ‘‘তখন ৪, ৬ ও ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ছিল। ৪ নম্বরে বর্ধমান-হাওড়া লোকাল, ৬-এ রামপুরহাট লোকাল আর ৭-এ আসানসোল লোকাল দাঁড়িয়েছিল। ট্রেন ধরতে গিয়ে হুড়োহুড়ি শুরু হয়।’’ অন্য প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার সিঁড়িটা এমনিতেই বেশ ছোট। তা ছাড়া, একই সময়ে রামপুরহাট, আসানসোল এবং হাওড়া যাওয়ার গাড়ি ঢোকায় যাত্রীদের ভিড়ও ছিল অস্বাভাবিক রকমের বেশি। ভিড়ের চাপে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। তার মাঝেই কয়েক জন পড়ে যান। তাঁদের উপর দিয়েই ট্রেন ধরার জন্য ছোটেন বাকিরা।