নয়াদিল্লি: বিহারের দুয়ারে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে অস্বস্তিতে আরজেডি শিবির। আইআরসিটিসি দুর্নীতি মামলায় আরজেডির প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করল দিল্লির এক আদালত। এই ঘটনা ঘিরে শোরগোল বিহারের রাজ্য রাজনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর হুঁশিয়ারির প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে নিশানা করেছেন লালু-পুত্র তেজস্বী। বিহারি আবেগেও শান দিয়েছেন তিনি। পুরো ঘটনাকে বিজেপির ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিহারিরা কোনও বহিরাগতকে ভয় পায় না। তিনি আরও বলেছেন, এমনটা যে হবে, তা জানাই ছিল। বিহারের মানুষ কিন্তু সব কিছু দেখছে।
সোমবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত লালু, তাঁর স্ত্রী তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী, তেজস্বী যাদব সহ একাধিক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, দুর্নীতি ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও মামলায় ‘নির্দোষ’ দাবি করে আইনি ও রাজনৈতিক লড়াইয়ের কথা জানিয়েছে আরজেডি শিবির। বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তেজস্বী বলেন, ‘এসব করে আমাদের রোখা যাবে না।’
২০০৪-০৯ পর্যন্ত লালু ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী থাকাকালে আইআরসিটিসির দু’টি হোটেলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। বিএনআর রাঁচি ও বিএনআর পুরী হোটেলের রক্ষণাবেক্ষণের টেন্ডার সুজাতা হোটেল নামে একটি বেসরকারি সংস্থাকে পাইয়ে দিতে লালু প্রভাব খাটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সিবিআইয়ের দাবি, এর পরিবর্তে সুজাতা হোটেলের দুই মালিক বিজয় ও বিনয় কোচরের থেকে একটি বেনামি সংস্থার নামে পাটনায় তিন একর জমি নিয়েছিলেন লালু। দাম কম দেখিয়ে ওই জমিটি তেজস্বী ও রাবড়ি দেবীর নামে করা হয়।
২০০৬ সালে মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। কিন্তু ২০১৭ সালের জুলাই মাসে লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। পাটনা, দিল্লি, রাঁচি ও গুরুগ্রামে লালুপ্রসাদ ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বাড়িতেও চলে তল্লাশি। আদালতে সিবিআইয়ের দাবি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। যদিও লালুর আইনজীবী বেনিয়মের অভিযোগ খারিজ করে দেন। এদিনের শুনানিতে আদালত জানায়, সম্ভাব্য জালিয়াতিকে প্রতারণা হিসেবেই দেখা উচিত।
আদালতে চার্জগঠনের পরই তারা আরজেডিকে একহাত নিয়েছে বিজেপি। তারা বলেছে, ‘আমজনতার টাকা কারা লুট করেছে, তা বিহারবাসী জেনে গিয়েছেন। মানুষই তাদের জবাব দেবেন।’ পালটা তেজস্বী বলেছেন, এক মাস আগে অমিত শাহ বিহারে এসে আমাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা বিহারি, ‘বাহারি’দের ভয় পাই না।