ভেসেছে ভুটানের জলে, ওরাও দিক ক্ষতিপূরণ: নাগরাকাটায় মমতা! বললেন, চাপে পড়েই নদী কমিশন নিয়ে বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্র
আনন্দবাজার | ১৪ অক্টোবর ২০২৫
ভুটানের জলেই উত্তরবঙ্গে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত! সোমবার জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা থেকে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পায়ে হেঁটে গোটা এলাকা ঘুরে দেখা এবং ত্রাণসামগ্রী বিলি করার পাশাপাশি মৃতদের পরিবারের এক জন করে সদস্যের হাতে চাকরির নিয়োগপত্রও তুলে দিলেন তিনি।
উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে গত বুধবারই কলকাতায় ফিরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন দিন পর, রবিবার আবার তিনি উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন। রবিবার আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন জায়গার পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন মমতা। তার পর সোমবার সকালে রওনা দেন নাগরাকাটার উদ্দেশে। প্রথমেই বামনডাঙায় যান মমতা। সেখানে সাত জনের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্যোগে এলাকাবাসীদের যা যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সে সব রাজ্য সরকার পূরণ করে দেবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বামনডাঙা থেকে মমতা বলেন, ‘‘আমরা অনেক দিন ধরে বলছি ইন্দো-ভুটান নদী কমিশন গড়া হোক এবং তার সদস্য করা হোক বাংলাকে। ভুটানের জলেই এত বড় ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাই ওরা ক্ষতিপূরণ দিক।’’ এর পরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘সবটাই তো আমাদের করতে হয়। দিল্লি এক পয়সাও দেয় না।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের চাপে আগামী ১৬ অক্টোবর এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্র। সেই বৈঠকে রাজ্য থেকে এক আধিকারিককে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও বৈঠকে ঠিক কী বিষয়ে আলোচনা হবে, সে সব স্পষ্ট করে জানাননি তিনি।
সাত জনের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার সময় মমতা বলেন, ‘‘যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে দিয়েছি। একটা করে চাকরি দেব বলেছিলাম, তারও ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে। আজই চাকরির নিয়োগপত্র পেয়ে যাবেন।’’ নাগরাকাটার যে সেতু পেরিয়ে গ্রামবাসীরা যাতায়াত করতেন, সেখানে লোহার একটি অস্থায়ী ছোট সেতুও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়া, দুর্যোগে যাঁদের বাড়িঘর ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মমতা। যাঁদের কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে, তাঁরা শস্য বিমার টাকা পাবেন। শুধু তা-ই নয়, যাঁদের নথিপত্র হারিয়েছে কিংবা জলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তাঁদের জন্য বিশেষ ক্যাম্পেরও ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। যাঁদের যা যা নথি হারিয়েছে, তার তালিকা তৈরি করে দিলেই সংশ্লিষ্ট নথির প্রতিলিপি বা ডুপ্লিকেট তৈরি করে দেবে সরকার।