• আমি যেমন কাউকে লেলিয়ে দিইনি, ‘চলো যুদ্ধ কর’, আমার মনে হয় দেবও একই ভাবে কাউকে লেলিয়ে দেয়নি
    আনন্দবাজার | ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • ইন্ডাস্ট্রি বলছে, এক ‘রাজা’র দুই ‘রানি’—‘রক্তবীজ ২’ এবং ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’। আবীর চট্টোপাধ্যায়ের দুটো ছবিরই নায়ক। তাঁর কাছে কোন ছবি ‘সুয়োরানি’? ‘দুয়োরানি’ই বা কে? ফোনে অকপট অভিনেতা।

    প্রশ্ন: আনন্দবাজার ডট কম-কে বলেছিলেন, একসঙ্গে দুটো ছবিমুক্তিও সফল আপনার। ধারা অব্যাহত রইল?

    আবীর: দেখুন, আমার অভিনীত ছবি নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই। তার আগে জেনে নিই, এই যে সাফল্যের কথা বলছেন, সেটা কারা ঠিক করছেন? কারণ, এত মতামত দেখছি বা শুনছি বিভিন্ন প্রান্ত থেকে! কখনও আপনারা লিখছেন। কখনও আমার পরিচিতরা তাঁদের মতো করে সমালোচনা লিখছেন। স্বাভাবিক ভাবেই আমার পছন্দের সঙ্গে বাকিদের পছন্দ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হয়তো মেলে না। তাই আমার ভাবনার মাপকাঠিতে যা বুঝেছি সেটা হল, পুজোর দুটো ছবি ‘রক্তবীজ ২’ এবং ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’র ১৫ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখন আর বলতে বাধা নেই, দুটো ছবিই প্রচুর মানুষ দেখেছেন। দ্বিতীয় ছবিটি নিয়ে দর্শকদের মতামতের ধরন একরকম। ‘রক্তবীজ ২’ নিয়ে বরং নানা জনে নানা কথা বলছেন। কেউ প্রশংসা করছেন। কেউ ‘রক্তবীজ’কে এগিয়ে রাখছেন। কেউ আবার চুলচেরা বিশ্লেষণেও বসেছেন। কিছু লোক কিছু দৃশ্যে আপত্তি জানিয়েছেন। তাঁরা অন্য রকম কিছু দেখতে চেয়েছিলেন। পুরোটাই আমি কিন্তু ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছি।

    প্রশ্ন: কী রকম?

    আবীর: নিন্দা হোক বা প্রশংসা— এই যে এত মানুষ দেখলেন, সেটাও তো ভাল! আবার দুটো ছবি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, এটাও ইতিবাচক দিক। ছবি দুটো দর্শককে ভাবাচ্ছে। যদি কারও ভাল না-ও লাগে, তার মানে আমি কোথাও ‘এক্সপেকটেশন’ তৈরি করতে পেরেছি। সেটাও একটা সাফল্য। সাফল্য উপভোগ করার থেকেও আমি অন্য কিছু করি। ছবিমুক্তির বেশ কিছু দিন পরে প্রেক্ষাগৃহের পিছনের সারিতে বসে দেখি, পর্যবেক্ষণ করি। আর শোনা কথাগুলো মিলিয়ে নিতে থাকি। এতে আগামী দিনে কাজ করতে সুবিধা হয়। বুঝতে পারি, কোন ধরনের কাজ করা উচিত, কোন ধরনের ছবি দর্শক দেখতে চাইছেন বা ছবি থেকে তাঁদের চাহিদা কী— এ গুলো ধরা পড়ে।

    প্রশ্ন: পর্যবেক্ষণ কী বলছে? আগামী দিনে ‘পঙ্কজ সিংহ’ না কি ‘তোপসে’র মতো চরিত্রের দিকে পাল্লা ভারী?

    আবীর: দুটো আলাদা স্বাদের ছবি। আশা এটাই করব, ছবিমুক্তির সময়ে আর কখনও যেন এ বছরের মতো সংঘাত সৃষ্টি না হয়। আগামী সব ছবির ক্ষেত্রেই এটা চাইছি। অনেকে জানতে চাইছেন, ‘রক্তবীজ ৩’-এ ‘পঙ্কজ সিংহ’ থাকবেন? তাঁদের জানিয়েছি, আগের ছবি দেখে থাকলে আপনারাই বলুন, ‘পঙ্কজ সিংহ’কে আর দেখতে চান কিনা বা ছবির শেষ দৃশ্য কি তার ফিরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে? কারণ, দর্শক যা চাইবেন সেটাই শিরোধার্য। অভিনেতা আবীরের মত, ফ্র্যাঞ্চাইজ়িতে অভিনয় করলেও আমি যে খুব ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির ফ্যান সেটা নয়। আমি আলাদা গল্প বলতে বেশি ভালবাসি।

    প্রশ্ন: আবীর ‘ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির ফ্যান’ নন!

    আবীর: ‘ব্যোমকেশ’ বা ‘সোনাদা’কে ছাড়। প্রথম ক্ষেত্রে, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যোমকেশকে নিয়ে অনেক গল্প লিখে গিয়েছেন। তাই তাকে নিয়ে আরও ছবি বানানো যায়। আবার সোনাদাকে দর্শক পছন্দ করলে সেটা হতে পারে। বাকি ছবির ক্ষেত্রে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি বানাব— এই ভাবনা নিয়ে ছবি বানালে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সাফল্য পেতে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির দিকে এগিয়ে যান অনেকে। সেইটা আমার কাছে একটু অস্বস্তিকর।

    প্রশ্ন: ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’ নিয়ে দর্শকমহলে আগ্রহ বাড়ছে। সেটা দেখে কি প্রচার না করতে পারার জন্য আফসোস হচ্ছে?

    আবীর: আবারও বলি, প্রচার করতে না পারায় যেমন মনখারাপ হয়েছে তেমনি রাগও হয়েছে। বিশেষ কারণে প্রচারে থাকা সম্ভব হয়নি। সেই সময় মনের মধ্যে যে রাগ বা অভিমান সেটা অবশ্যই জমেছিল। যখনই দেখলাম, দর্শক ওই ছবির প্রতিও আগ্রহী— অনুভূতিগুলো গলতে থাকল! রইল বাকি, বেশি প্রচারের কথা। এ ক্ষেত্রে বলব, অনেক সময় বেশি প্রচার ছবির পক্ষে ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে। আবার, কিছু ছবির ক্ষেত্রে প্রচারের প্রয়োজন হয়। এ সব সরিয়েই বলব, কম প্রচারের পরেও এই যে অনীক দত্তের ছবিকে দর্শকেরা ভালবাসছেন, সেটাই আমার খুঁতখুঁতে ভাব মুছে দিয়েছে। বেশ হাল্কা লাগছে নিজেকে।

    প্রশ্ন: আপনি প্রমাণ করে দিলেন, ছবির মান ভাল হলে প্রচারের প্রয়োজন পড়ে না...

    আবীর: না না, আমি কিচ্ছু প্রমাণ করিনি। আমি প্রমাণ করতে চাইনি। প্রমাণ করব বলে প্রচারে যোগ দিই না, এ রকমটা না কিন্তু।

    প্রশ্ন: বেশ তো, ‘প্রমাণিত হল’ বলি?

    আবীর: এর আগেও বেশ কিছু ছবির ক্ষেত্রে দেখেছি, কিছু ছবি যেমন প্রচারের আলো পেয়ে প্রচুর মানুষের মনে বাড়তি আগ্রহ তৈরি করেছে। আমি অন্যের ছবি নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি না। এখন অবশ্য এটাই ট্রেন্ড। লোকে অন্যের ছবি নিয়ে কথা বলে বেশি। আমি তাই শুধু আমার ছবির উদাহরণ দিই। আগের ছবি ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’রও কিন্তু নির্দিষ্ট প্রচার হয়েছিল। তার পরেও ছবিটি ভাল ফল করেছে। আবার এমনও হয়েছে, কোনও ছবি মুক্তি পাওয়ার পর মনে হয়েছে, আরও একটু প্রচার করে যদি ছবিটাকে আরও কিছু সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যেত। এটা চলতে থাকবেই। এখনও এর কোনও স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম তৈরি হয়নি।

    প্রশ্ন: আবীর চট্টোপাধ্যায়ের উপরে অনীক দত্তের প্রচ্ছন্ন অভিমান কমেছে তা হলে?

    আবীর: আমাদের কিন্তু কথাবার্তা হচ্ছিল! এমন নয় যে কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বলতে পারেন, একটু উত্তপ্ত কথাবার্তা বিনিময় হয়েছিল। তার পিছনেও ন্যায্য কারণ ছিল। ছবির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা প্রত্যেকে ভীষণ উদ্বিগ্ন ছিলাম। সেই দুশ্চিন্তা থেকেই কিন্তু সবটা হয়েছিল। দিনের শেষে আমরা কিন্তু ছবির ভালই চেয়েছি। ছবিমুক্তির আগে-পরে তাই আমাদের মধ্যে কথা ছিল। যেমন, ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’ দেখতে গিয়ে অনেকে ‘পাইরেসি’ করছিলেন। সেটা জেনে সঙ্গে সঙ্গে প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসানকে জানিয়েছি। তিনি পদক্ষেপ করেছেন।

    প্রশ্ন: অনীকের ‘অপরাজিত’ করতে চেয়েও পারেননি। এ বার ‘তপস্মিত’ বা ‘তোপসে’ হলেন কি সেই অনুভূতি থেকেই?

    আবীর: প্রথম ভাগের উত্তর দিই আগে। তারিখের সমস্যার কারণে শেষ মুহূর্তে ‘অপরাজিত’ থেকে সরতে হয়েছিল। অবশ্যই তখন খারাপ লেগেছিল। কিন্তু যা ঘটেছে সেটা ভালর জন্যই হয়েছে। ছবির ফলাফল সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে। জীতু কমল খুব ভাল কাজ করেছেন। আমার না থাকা ছবির ক্ষেত্রে কিন্তু ‘শাপে বর’ হয়েছিল। একই সঙ্গে তখনই মনে হয়েছিল, পরের ছবিতে যদি কাজ করতে পারি। এ বার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর। অনেকেই জানেন না, ২০১৮-য় অনেক ঘষামাজা, পরিবর্তনের পর ছবিটা হল। বহু লোক কিচ্ছু না জেনে টিপ্পনি কেটেছেন। তাঁদের কথা শুনে বিদ্রুপের হাসি হেসেছি।

    প্রশ্ন: অন্যতম টিপ্পনি, অনীক নাকি সত্যজিৎ রায়ের ছায়ায় ম্লান!

    আবীর: এত বড় মহীরুহ তিনি! তাঁর ছায়া তো বড় হবেই। সেই ছায়া কারও উপরে ছায়াপাত করতেই পারে। আমার মনে হয় না, এটা শুনে অনীকদা রাগ করবেন।

    প্রশ্ন: কাজী নওসাবা আহমেদ প্রথম টলিউডে অভিনয় করলেন। আপনি তাঁর প্রথম নায়ক। নায়িকাকে নিয়ে কিছু বলুন?

    আবীর: (হেসে ফেলে), খুব সিরিয়াস। খুবই ভাল। শিখতে আগ্রহী। আর সেই শেখার আগ্রহ এতটাই যে সারা ক্ষণ সিরিয়াস! আমি তো মাঝেমধ্যে মজা করতাম, সামনে পরীক্ষা আছে, পড়াশোনা কর।

    প্রশ্ন: জয়া আহসান, কাজী নওশাবা আহমেদ— দু’জনেই বাংলাদেশি। দু’জনের মধ্যে মিল না অমিল পেলেন?

    আবীর: এটা বলা খুব মুশকিল। প্রথমত, জয়ার সঙ্গে প্রচুর ছবি করেছি। কোনওটা জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। কোনওটা সমালোচকদের প্রশংসাধন্য। আবার, কোনওটা দর্শকদের প্রিয়। নওসাবার সঙ্গে আপাতত একটাই কাজ। ফলে, দাঁড়িপাল্লায় বিচার করাটা খুব সহজ নয়।

    প্রশ্ন: তা হলে পুজোয় আবীরের বিপরীতে নওশাবা আর মিমি চক্রবর্তী— এর বিশ্লেষণ সম্ভব?

    আবীর: মজার কথা বলি? ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’ ছবিতে নওশাবা ঠিক বিপরীতে ছিল না। জানেন, আমরা পরস্পরের দিকে এক সেকেন্ড বেশি তাকালেও পরিচালক শট কেটে দিয়েছেন! এই নিয়ে অনীকদার পিছনে কম লেগেছি? বলেছি, পুরো ‘ওয়াটার পিউরিফায়ার’-এর মতো ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকেছ। গল্পেও রোমান্টিক অ্যাঙ্গেল ছিল না। আর মিমির সঙ্গে এটা আমার তিন নম্বর ছবি। এখানেও মজা আছে। ‘বোঝে না সে বোঝে না’ ছবিতে আমার বিপরীতে পায়েল সরকার। মিমির বিপরীতে সোহম চক্রবর্তী। সেই ছবির দৃশ্য নিয়ে মিম বানিয়ে দর্শক সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন! বক্তব্য, ‘আবীর-মিমি কি প্যাচআপ করে নিল?’ আমাদের কাজ করে ভাল লেগেছে। দর্শকদের এখানেও ভিন্ন মত। কারও আরও মাখোমাখো প্রেম দেখার ইচ্ছা ছিল। কেউ সি বিচের বদলে ‘শাটল প্রেম’-এর পক্ষে, সেটাও শুনছি।

    প্রশ্ন: সমালোচকেরা বলছেন, শৈলশহরে নওশাবার বিপরীতে আবীর যতটা সহজ, সি-বিচে মিমির বিপরীতে নাকি ততটাও নন! আপনি রক্ষণশীল?

    আবীর: আমি একটু ‘ওল্ড স্কুল’। যদিও সি বিচে সেটা কাজ করেনি। ছবিতে নায়িকার ভাবনায় দৃশ্যকল্প তৈরি হয়েছে। প্রথম প্রেম জেগেছে সংযুক্তার মনে। সেই জন্য নারীকণ্ঠে গান, ‘আমার চোখের নীলে, তুমি তো সেই ডুব দিলে’। এ ভাবেই নিজের অনুভূতি সে পঙ্কজকে বোঝাল। পঙ্কজ তখন তার মতো করে বিষয়টি গ্রহণ করার চেষ্টা করেছে। একজন পুলিশ অফিসারের পক্ষে ওই আড়ষ্টতাই স্বাভাবিক। এটা বলতে পারেন, পুলিশ অফিসার কেন সি বিচে গেলেন?

    প্রশ্ন: আপনার অবাস্তব লাগেনি?

    আবীর: অবাক হয়েছি। আর সিনেমা ব্যাপারটাই তো অবাস্তব। আমি তাই আমার মতো করে অভিনয়ের চেষ্টা করেছি। কোনও ভাবে পঙ্কজ যদি সি বিচে পৌঁছেও যায়, হয়তো একটু লজ্জা পাবে। সেটাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। জানি, দর্শকের তাতেও মতপার্থক্য থাকবে।

    প্রশ্ন: শুটিং করতে গিয়ে আবীর কি মিমির চোখের নীলে ডুব দিলেন?

    আবীর: আমার কাছে এই প্রশ্ন অবান্তর। সিনেমায় যেমন ‘সংযুক্তা’ বলেছে, ‘পার্টনার ইন ক্রাইম’, ঠিক তেমনই শুটিংয়ে আমরা পর্দায় উষ্ণতা আর রসায়ন ছড়ানোর ‘পার্টনার’ ছিলাম (হাসি)।

    প্রশ্ন: স্ত্রী নন্দিনী, মা-বাবা রুমকি এবং ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায় ওই গানের দৃশ্য দেখেছেন?

    আবীর: নন্দিনী খুব খুশি। আর মা-বাবা ৫০ বছর ধরে এই পেশায়। আমি সবসময় বিশ্বাস করি, আমাদের আগের প্রজন্ম অনেক বেশি স্মার্ট। এটা সমস্ত মা-বাবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

    প্রশ্ন: পুজোমুক্তির আগে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, এ বছর ‘আবীর বনাম দেব’ না ‘দেব বনাম আবীর’? আপনাকে সেই প্রশ্নই করছি...

    আবীর: এই বিতর্কে যদি দু’জনের ছবিই ভাল ব্যবসা করে তা হলে আমরা দু’জনেই দারুণ খুশি। দুটো ছবিই তো চলছে। চলুক না! সমস্যা কোথায়? যদিও দেবের অনুরাগীরা বলবেন, ‘রঘু ডাকাত’ বেশি ভাল চলছে। ‘রক্তবীজ’-এর অনুরাগীরা বলবেন, এই ছবিও ভাল ফল করেছে। তবে পরিসংখ্যান নিয়ে যদি কথা তোলেন, তা হলে আমি মুখে কুলুপ আঁটলাম। যে দিন সঠিক পরিসংখ্যান জানিয়ে কথা হবে সে দিন কথা বলব, নইলে নয়।

    প্রশ্ন: ‘বনাম’-এর দৌরাত্ম্য যদি বিনোদন দুনিয়ার পক্ষে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে?

    আবীর: সেই দায় সবাইকে নিতে হবে। সেই দায় শুধু অভিনেতাদের নয়। আমাদের সামনে রেখে বিষয়টিকে যদি অস্বাস্থ্যকর জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়, তা হলে যাঁরা নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা সামলান। তাঁরা দায়িত্ব নিন। আমরা প্রচণ্ড পরিশ্রম করে কাজ করি। আমি যেমন কাউকে লেলিয়ে দিইনি, ‘চলো যুদ্ধ কর’, আমার মনে হয় দেবও একই ভাবে কাউকে লেলিয়ে দেয়নি।

    প্রশ্ন: ছবিমুক্তির আগে ‘সাকসেস পার্টি’! এটাও এ বছর পুজোর ছবিমুক্তির আগে দেখতে হল...

    আবীর: আমায় এমনিতেই কোনও পার্টিতে দেখতে পাবেন না। আর ছবিমুক্তির আগে নির্মাতারা প্রচারে আমায় যতটা চান সেটাও তো থাকি না! ফলে, এর উত্তর আমি দিতে পারব না। আগে নিজের মাপকাঠিতে ‘সাফল্য কাকে বলে’ সেটা বুঝি, তার পর তো পার্টি।

    প্রশ্ন: ইদানীং ছবিমুক্তির আগে নায়ক-নায়িকার প্রেম ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আপনি বেরসিকের মতো মিমিকে বললেন, তুই শেষে আমার সঙ্গে বিকিনি দৃশ্যে অভিনয় করলি!

    আবীর: দেখুন, যাঁরা আমার ছবি দেখেন তাঁরা জানেন কোনটা ঠিক, কোনটা তৈরি করা। যতই ছবি হিট করানোর ফর্মুলা মেনে ‘উমম! ওদের মধ্যে চাটনি তৈরি হচ্ছে’... এই ভাব ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি, ভবি ভোলে না। জানেন তো, ‘পাবলিক সব জানতে হ্যায়’। আমাদের থেকে অনেক গুণ বেশি বুদ্ধিমান। সব ধরতে পারেন। না বোঝার ভান করেন মাত্র। আমার বিশ্বাস, এ সব করে অনেক সময় লাভের থেকে ক্ষতি হয় বেশি। আর খামোখা মিথ্যা বলে ছবির প্রচার করব কেন! আমার কি এত খারাপ অবস্থা?

    প্রশ্ন: দর্শককে প্রেক্ষাগৃহে ছবি দেখার জন্য অনুরোধ করছেন, এ দিকে দুটো ছবির এক নায়ক এখনও প্রেক্ষাগৃহ থেকে দূরে...

    আবীর: গত সাত বছর ধরে নিজের মুক্তি পাওয়া ছবি দেখি না। পরে দেখি। এ বারও সেটাই করব। যাতে কোনও ছবির প্রতি পক্ষপাতিত্ব না করে ফেলি। নিজের কাজের চুলচেরা বিচার যাতে করতে পারি।

    প্রশ্ন: এ বারের পুজোয় রাজারাজড়ার মতো আবীরের দুই রানি, ‘রক্তবীজ ২’ আর ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’। সুয়োরানি আর দুয়োরানি কে?

    আবীর: (জোরে হাসি), আমি কি সত্যিকারের রাজা, যে আমার সুয়োরানি-দুয়োরানি থাকবে!
  • Link to this news (আনন্দবাজার)