গত জুলাইয়ের শেষে নিউ গড়িয়া সংলগ্ন কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন বিপত্তির কারণে বন্ধ করে দিতে হয়। ওই স্টেশন থেকে যাত্রীদের ওঠানামা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর প্রান্তিক ওই স্টেশন থেকে ট্রেন ঘোরানো নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। পরিস্থিতির মোকাবিলায় মেট্রো কর্তৃপক্ষ শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন থেকে ট্রেন ঘোরানোর ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু, ওই ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় থাকায় পুজোর আগে কর্তৃপক্ষ ওই কাজ শুরু করেও মাঝপথে মুলতুবি করে দেন। পুজো মিটে গেলেও আপাতত কালীপুজো এবং দীপাবলির আগে সে কাজে হাত দিচ্ছেন না বলে মেট্রো সূত্রের খবর।
অতএব উৎসবের মরসুম পার হওয়ার পরেই মেট্রো কর্তৃপক্ষ ওই স্টেশনে ক্রসওভার (ট্রেন ঘোরানোর ব্যবস্থা) নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করবেন বলে খবর। সম্প্রতি জোকা-মাঝেরহাট মেট্রোর দ্বিতীয় টানেল বোরিং মেশিনের সুড়ঙ্গ খননের কাজের সূচনা করেন কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার শুভ্রাংশু শেখর শর্মা। তিনি ওই অনুষ্ঠানে জানান, দিন পনেরো পরে তাঁরা ক্রসওভার তৈরির কাজে হাত দেবেন। কাজ শুরু করার পরে তা সম্পূর্ণ করতে আরও দিন তিনেক লাগতে পারে। মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজারের দেওয়া ইঙ্গিত অনুযায়ী, কালীপুজো এবং দীপাবলি পার হওয়ার পরেই ওই কাজ শুরু হওয়ার কথা।
মেট্রো সূত্রের খবর, কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন থেকে ট্রেন ঘোরাতে গিয়ে মেট্রো পথে দমদম অভিমুখে ট্রেন ছাড়তে গিয়ে বিলম্ব হচ্ছে। তাতে পরিষেবার উপরে চাপ বাড়ছে। ওই সমস্যা মেটাতে টালিগঞ্জ সংলগ্ন মেট্রোর কারশেড নতুন করে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। টালিগঞ্জ থেকে রেকের রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও ওই স্টেশন থেকে দমদম অভিমুখে ব্যস্ত সময়ে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করা হয়। আপাতত কিছু ট্রেন ব্যস্ত সময়ে টালিগঞ্জ সংলগ্ন মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশন থেকে ঘুরিয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত চালানো হচ্ছে। কিন্তু, পুজোর মধ্যে রেক রক্ষণাবেক্ষণের পরিকাঠামো চালু করার প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা যায়নি বলে খবর।
এক বার শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনের ক্রসওভার থেকে ট্রেন ঘোরানোর প্রক্রিয়া শুরু হলে কবি সুভাষ মেট্রোর কারশেড কার্যত সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিতে হবে, এমনটাই জানিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ওই দুই সমস্যার দিকে তাকিয়ে তাই টালিগঞ্জে কারশেডের বকেয়া কাজ সেরে শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনে ক্রসওভার তৈরি সম্পূর্ণ করতে চান কর্তৃপক্ষ।
একই সঙ্গে নতুন ক্রসওভার তৈরি হওয়ার পরে সেখান থেকে ট্রেন ঘোরানোর কতটা মসৃণ ভাবে সম্পন্ন হচ্ছে, তাও লক্ষ্য রাখতে হবে বলে জানাচ্ছেন মেট্রোরশীর্ষ কর্তাদের একাংশ। শুরুতেই পুরো প্রক্রিয়া ততটা মসৃণ নাও হতে পারে বলে দাবি। তখন পয়েন্ট এবং সিগন্যালের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। সূত্রের খবর, সব দিক মাথায় রেখেই তাই ধীরেসুস্থে উৎসবের মরসুম মিটলে ওইকাজে হাত দিতে চাইছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।