তথাগত চক্রবর্তী: বারুইপুরের বেগমপুরে নৃশংস হত্যাকাণ্ড। মৃত যুবকের নাম শান্ত মণ্ডল। দশমীর রাতে নিজের জামাইবাবুর ডাকে বেরিয়ে গিয়ে আর ফেরা হল না এই যুবকের। নয় দিন পর পুলিসের বিশেষ টিম গ্রেফতার করল মূল চক্রী জামাইবাবু দেবব্রত পাত্র-সহ আরও তিনজনকে। ধৃত দেবব্রতের বাড়ি বারুইপুরের বেলেগাছিতে।
বাকি অভিযুক্তরা মিনাজুল পাইক, জসিমুদ্দিন লস্কর এবং অটো চালক হাফিজুল মোল্লা। পুলিস সূত্রে খবর, বেঙ্গালুরুর গাঁজা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল শান্ত মণ্ডল। জমজমাট ব্যবসা, নিয়মিত সোনার চেন এবং টাকার জোর—এসবই ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়ায় জামাইবাবু দেবব্রতের কাছে। কারণ, তিনিও বেঙ্গালুরুতে খাবার ডেলিভারির কাজ করলেও ব্যবসা একেবারে মুখ থুবড়ে পড়ে। ব্যর্থতার হতাশা আর আত্মীয়ের সাফল্য মিলে মাথা গরম হয়ে ওঠে দেবব্রতের। এরপরই খুনের ছক।
দশমীর দিন ফোন করে শান্তকে ডেকে আনে দেবব্রত। হাফিজুলের অটোতে তোলে তাকে। সঙ্গে ছিল মিনাজুল ও জসিমুদ্দিন। প্রথমে সবাই মিলে যায় বাসন্তীতে। সেখানে মদ খাওয়া এবং পরিকল্পনার চূড়ান্ত রূপ। গভীর রাতে শান্তকে নিয়ে ফেরা হয় বেগমপুর সাট কলোনির নির্জন এলাকায়। সেখানে ফের মদ্যপান করিয়ে হঠাৎই এক ধারাল কাটারি দিয়ে আক্রমণ। গলার নলি কেটে খুন করা হয় শান্তকে। একাদশীর দিন রাস্তার ধারে পড়ে থাকে রক্তাক্ত দেহ।
তদন্তে নেমে পুলিস হাতে পায় তথ্যপ্রমাণ। গ্রেফতার করে চারজনকেই। বাজেয়াপ্ত হয় খুনের অটো। এখনও খোঁজ চলছে সেই কাটারিটির, যা খুনের জন্য বিশেষভাবে কামারের কাছ থেকে কিনেছিল অভিযুক্ত দেবব্রত। পারিবারিক সম্পর্কের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ব্যবসায়িক হিংসাই শেষমেশ কেড়ে নিল এক যুবকের প্রাণ। বারুইপুরবাসী স্তব্ধ এই নির্মম ঘটনায়।