• দুর্গাপুর ‘গণধর্ষণ’ কাণ্ডের জল গড়াল হাই কোর্টে
    প্রতিদিন | ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও গোবিন্দ রায়: দুর্গাপুর ‘গণধর্ষণ’ কাণ্ডের জের গড়াল আদালতের দোরগোড়ায়। এনিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়েরের অনুমতি মিলল। বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল মঙ্গলবার এই অনুমতি দিয়েছেন বলে খবর। আগামী ১৬ তারিখ এনিয়ে শুনানির সম্ভাবনা। জানা যাচ্ছে, দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ ঘটনার জেরে সেখানে যে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠছে, তার বিরোধিতায় মামলা দায়ের করেছে। আরেকটি আবেদন জানাতে চলেছে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। পুলিশি  তদন্তের অগ্রগতি, রাজ্য পুলিশে ভরসা না থাকায় সিবিআই তদন্ত চাওয়া হয়েছে। এদিকে, এই ঘটনায় তদন্তও এগোচ্ছে। ধৃত অভিযুক্তদের নিয়ে মঙ্গলবার ঘটনার পুনর্নির্মাণের তোড়জোড় চলছে। নির্যাতিতার যে সহপাঠীকে আটক করা হয়েছে, এদিন তাঁকেও ধৃতদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে পারে পুলিশ।

    গত শুক্রবার, ১০ অক্টোবর দুর্গাপুরের পরাণগঞ্জে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। রাত ৮টা নাগাদ বন্ধুর সঙ্গে খাবার কিনতে ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়েছিলেন ওড়িশার বাসিন্দা ওই ছাত্রী। তখনই তিনি নির্যাতনের শিকার হন বলে জানা যায়। অভিযোগ, পরাণগঞ্জে জঙ্গলের জঙ্গলের দিকে টেনে নিয়ে গিয়ে ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়। শনিবার সকালে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। রাস্তায় নেমে ক্ষোভ উগরে দেন সাধারণ মানুষ থেকে ছাত্রসমাজ। ঘটনার গুরুত্বের নিরিখে প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তদন্তে নামে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ। আশ্বাস দেওয়া হয়, দ্রুতই দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তদন্তের স্বার্থে ঘিরে ফেলা হয় গোটা পরাণগঞ্জের জঙ্গল।

    রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল। মাত্র কয়েকঘণ্টার মধ্যে পরপর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার দুর্গাপুর কাণ্ডে শেষ দুই অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল দুর্গাপুর নগরনিগমের অস্থায়ী কর্মী নাসিরউদ্দিন শেখকে। সোমবার দুপুরে শেষ অভিযুক্ত সফিকুল শেখকেও জালে এনেছেন তদন্তকারীরা। বিজড়া এলাকায় গা ঢাকা দিয়ে ছিল সে। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে সেখানকার গোপালমাঠ থেকে গ্রেপ্তার করেছে সফিকুলকে। আগেই ডাক্তারি ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা জানিয়েছিল জেলা পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আশ্বাস দিয়েছিলেন, জড়িতরা কড়া শাস্তি পাবেই। এবার অভিযোগের দু’দিনের মধ্যে সব অভিযুক্ত ধরা পড়ার পর এর কিনারা করতে আরও তৎপর পুলিশ।

    মঙ্গলবার শেখ রিয়াজউদ্দিন ও শেখ নাসির উদ্দিনকে তদন্তের স্বার্থে নিয়ে যাওয়া হলো বিজড়া গ্রামে। পুলিশের সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকাতেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত একাধিক সূত্র লুকিয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ। দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ ও দুর্গাপুর থানার পুলিশের যৌথ দল সরেজমিনে তদন্ত করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, এই অভিযানে খুব দ্রুতই আসল রহস্য উন্মোচিত হবে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)