গ্রামে রাস্তাই নেই! ঢুকল না অ্যাম্বুল্যান্স, 'ডোলি'তে যুবতীর দেহ কাঁধে নিয়ে ১২ কিমি পথ পায়ে হাঁটলেন আত্মীয়রা ...
আজকাল | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৫ সাল। অথচ দেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামে নেই রাস্তা। যেখানেই পৌঁছল না অ্যাম্বুল্যান্স। বাধ্য হয়ে মৃত যুবতীর দেহ কাঁধে নিয়ে ১২ কিমি পথ পায়ে হেঁটে গ্রামে পৌঁছলেন পরিবারের সদস্যরা। ক্লান্ত, বিধ্বস্ত হয়ে শোক ভুলে গিয়েছিলেন তাঁরা। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক শোরগোল।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশে। এই রাজ্যেই পার্বতীপুরম মান্যম জেলার চিন্তামালা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। এই গ্রামেই নেই কোনও রাস্তা। তাই পৌঁছতে পারেনি অ্যাম্বুল্যান্স। এক মহিলার মৃতদেহ 'ডোলি'তে নিয়ে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ১২ কিমি পথ পায়ে হেঁটে দাহ করতে গেলেন পরিবারের সদস্যরা।
সালুরু মণ্ডলের কোদামা পঞ্চায়েতে ঘটনাটি ঘটেছে। একুশ শতকেও যেখানে পাকা রাস্তার স্বপ্ন দেখেন গ্রামবাসীরা। রাস্তার অভাবে জীবনযাপনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় সকলকে। চিকিৎসা থেকে পড়াশোনা, নিত্যদিনের হাজারটা সমস্যা বেড়েই চলে রাস্তার অভাবে।
৪০ বছর বয়সি মৃত যুবতী চিন্তামালার বাসিন্দা ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। সম্প্রতি হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। কিন্তু ক্রমেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর দেহটি গ্রামে আনার পথেই বিপত্তি দেখা দেয়। গ্রামে রাস্তা না থাকায়, মৃতদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছতে পারে না অ্যাম্বুল্যান্স।
অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে নিরুপায় হয়ে ডোলিতে যুবতীর দেহ তুলে, কাঁধে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। ১২ কিমি পথ জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে বিধ্বস্ত হয়ে সকলে পৌঁছন গ্রামে। যে ঘটনার পরেই রাস্তার অভাব ঘিরে তুমুল ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসেই দক্ষিণ ভারতের আরও এক রাজ্যে এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। গ্রামে রাস্তাই নেই। প্রবল বৃষ্টিতে কাদায় ভরে উঠেছে সব পথ। যেখান থেকে পায়ে হেঁটে যাওয়াই কষ্টকর। সেই পথে আর ঢুকল না অ্যাম্বুল্যান্স। অ্যাম্বুল্যান্স না আমি আসায়, বাড়ি থেকে ডোলিতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল গর্ভবতীকে। সেই কাদায় ভরা পথ পেরিয়ে গেলেন অন্তঃসত্ত্বা তরুণী। মাঝ পথেই সন্তান প্রসব করলেন তিনি।
সন্তান প্রসবের আগে যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন তরুণী। হেঁটে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না তাঁর। শেষমেশ তাঁর 'ডোলি'তে করে নিয়ে যাওয়া হল। তবে এই 'ডোলি' পালকির মতো সুরক্ষিত নয়। রীতিমতো বাঁশের লাঠিতে, কাপড়ের মধ্যে ঝুলতে ঝুলতে কয়েক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করলেন তিনি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার ভদ্রদ্রি কোথাগুদেম জেলায়। প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন তিনি। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স না আসায় ওই রাস্তা দিয়েই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তাঁকে। যন্ত্রণা আরও বাড়তে মাঝ রাস্তাতেই সন্তান প্রসব করেন তিনি।
এর কিছুক্ষণ পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছয়। সেই অ্যাম্বুল্যান্সে করে তরুণী ও সদ্যোজাত সন্তানকে সত্যনারায়ণপুরম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে মা ও সদ্যোজাত সন্তান দুজনেই স্থিতিশীল রয়েছে।