• গরিব টোটো চালকদের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে যানজট নিয়ন্ত্রণে মানবিক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের...
    আজকাল | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি, ১৪ অক্টোবর:‌ রাজ্য সরকার যথেষ্ট মানবিক। তাই আপাতত টোটো বাতিল করার কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। নির্ধারিত সময়ে রেজিস্ট্রেশন না করলে বাতিল করা হবে। রেজিস্ট্রেশনের ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার একথা জানান রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। 

    সম্প্রতি টোটো নিয়ে বেশ বড়সড় পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য পরিবহন দপ্তর। রাজ্যসহ জেলায় দিন দিন বেড়ে চলেছে অবৈধ টোটোর সংখ্যা। ফলে যানজট তৈরি হচ্ছে শহরে। রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বেআইনিভাবে তৈরি হচ্ছে টোটো। যেগুলির কোনও চেসিস নম্বর থেকে মোটরের নম্বর এবং ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। টিসিআর ছাড়াই বিভিন্ন জায়গায় দোকান খুলে দেদার বিক্রি হচ্ছে টোটো। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টোটো। যার ফলে বিমা নেই। সেই টোটো যাত্রী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করলে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বেড়ে যাওয়া এই টোটো নিয়ন্ত্রণ করতে গত ৯ অক্টোবর রাজ্য সরকারের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত টোটোকে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। নির্দেশ অনুযায়ী ৩০ নভেম্বরের পর যে সমস্ত টোটোর রেজিস্ট্রেশন থাকবে না সেগুলি বাতিল হয়ে যাবে। 

    এই প্রসঙ্গে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, টোটোকে সরকারি পরিবহন আইনের আওতায় আনতে রেজিস্ট্রেশনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে গরিব মানুষের রুটি রুজির কথা মাথায় রেখে যে সমস্ত টোটোর মোটর নম্বর এবং চেসিস নম্বর নেই সেগুলিকে এখনই বাতিল করা হচ্ছে না। দু’‌বছর সময় দেওয়া হয়েছে। তারপর সেগুলি বাতিল হয়ে যাবে। 

    তাঁর কথায়, একাধিক জায়গায় বেআইনি টোটো তৈরি হচ্ছে। সেগুলি রাস্তায় ছাড়ার ফলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এবং সেই সমস্ত টোটোর বৈধ কাগজ না থাকায় যাত্রী নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। বৈধ প্রস্তুতকারক সংস্থা থেকে টোটো কিনতে হবে। প্রত্যেক টোটোয় গাড়ির নম্বর এবং কিউ আর কোড থাকবে। ফলে নজরদারিতেও সুবিধা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার হুগলি আরটিও দপ্তরে ই–রিকশা প্রস্তুতকারক এবং বিক্রেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে যাবতীয় আলোচনা হয়েছে। এই বিষয়ে বেঙ্গল ইলেকট্রিক ভেহিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শেখ নাসিরুদ্দিন বলেন, রাজ্য সরকারের তরফে যথার্থ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে মন্ত্রীকে জানানো হয়েছিল অনেক জায়গায় বেআইনিভাবে টোটো তৈরি হচ্ছে। সেগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করা হয়েছিল যেগুলির কোনও বৈধ কাগজ নেই। সম্প্রতি রাজ্যের তরফে একটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে গোটা বিষয়টি সিস্টেমেটিক হবে আশা করা যাচ্ছে। তবে এখনও বহু টোটো চালক বা টোটো ডিলাররা এই রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে অবগত নয়। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দীনেশ জালান বলেছেন, সংগঠনের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল বেআইনি টোটো বিক্রি বন্ধ করা। বহু গ্রিল কারখানা, ঝালাই কারখানায় টোটো তৈরি হয়। যার কোনও বৈধতা নেই। এই নিয়ে অনেকবার দরবার করা হয়েছে। বেআইনি টোটো উৎপাদন বিক্রি বন্ধ না করা হলে রাস্তায় যানজট বাড়বে। পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপত্তাও থাকবে না। রাজস্ব আদায়ও হবে না। সম্প্রতি রাজ্য সরকার অতি মানবিক এবং সদর্থক পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রত্যেক ই–রিকশার রেজিস্ট্রেশন করা হলে রাজ্যের পাশাপাশি যাত্রী এবং টোটো চালক সকলেই লাভবান হবে।    

    ছবি:‌ পার্থ রাহা

     
  • Link to this news (আজকাল)