• সম্পত্তির লোভ? খড়গপুরে বৃদ্ধা মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়াল ‘গুণধর’ ছেলে-বউমা!
    প্রতিদিন | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: বৃদ্ধা মায়ের বাড়িতেই স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন ছেলে। এখন সেই মা-কেই বাড়ি থেকে মারধর করে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘গুণধর’ ছেলে ও বউমার বিরুদ্ধে। শেষপর্যন্ত এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন ওই বৃদ্ধা। ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ছেলে মাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন বলে খবর। কিন্তু ‘অতিষ্ট’ বৃদ্ধা চাইছেন ছেলে-বউমা বাড়ি ছেড়ে চলে যাক।

    খড়গপুরের কৌশল্যা ক্যানাল পাড় এলাকায় বাড়ি বৃদ্ধা মণিকা ভট্টাচার্যর। তিনি অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী। স্বামীর মৃত্যুর পর ওই বসতবাড়ির মালিক ওই বৃদ্ধা। ওই বাড়িতেই থাকেন ছেলে অমিতাভ ওরফে রাজা ভট্টাচার্য ও তাঁর স্ত্রী। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বৃদ্ধার উপরে অত্যাচার চলছে। ছেলে-বউমা তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে দিন কয়েক আগে বার করে দিয়েছেন! বৃদ্ধার ব্যাঙ্কের পেনশনের বই, কাগজপত্রও নিয়ে নেওয়া হয়েছে! নিজের বাড়িতেই জায়গা না পেয়ে রাস্তাতেই ঘুরছিলেন ওই বৃদ্ধা! শেষপর্যন্ত এক প্রতিবেশীর বাড়িতে তিনি আশ্রয় পান।

    ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রতিবেশীদের মধ্যেও চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার সকালে বৃদ্ধা মাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন গুণধর ছেলে। তবে বৃদ্ধা ছেলে-বউমার ব্যবহারে সন্ধিহান। বৃদ্ধা মণিকা ভট্টাচার্যর অভিযোগ, “আমার থেকে সবসময় টাকা চায়। থাকতে দিচ্ছে না। ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখে দিচ্ছে। শৌচাগার ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। আমি যাতে ঘর থেকে বেরিয়ে যাই, সে কারণেই এই অত্যাচার ছেলে ও বৌমা করে চলেছে। আমার বাড়ি, আমার পেনশন সব কেড়ে নিতে চাইছে। বাধ্য হয়ে এখন আমি লোকের বাড়িতে পড়ে আছি।”

    বৃদ্ধা এর আগে থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ। যদিও খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার পুলিশ এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চায়নি বলে খবর। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার লোকজনও। বৃদ্ধা চাইছেন ছেলে-বউমার উচিত সাজা হোক। তাঁর বাড়ি থেকে চলে যাক ছেলে-বউমা। বৃদ্ধার ছেলে অমিতাভ ভট্টাচার্য এলাকায় একটি নেশা নিরাময় কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত। তিনি বৃদ্ধার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। ছেলের কথায়, “মায়ের অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। উনি নিজেই বাড়ি ছেড়ে লোকের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। মায়ের মূল উদ্দেশ্য আমার স্ত্রীকে থাকতে না দেওয়া। তাই যত রকমের ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)