অযোধ্যায় ৮ বিক্রেতাকে প্রকাশ্যে ওঠবস করাল প্রশাসন, নিন্দার ঝড়, রামমন্দিরের কাছে পুজোর সামগ্রী বিক্রির ‘সাজা’
বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
অযোধ্যা: ‘সাধু কহে, আপনায় স্থাপিয়াছ, জগতের দেবতারে নহে...’! অযোধ্যায় রামমন্দির সংলগ্ন ‘রামপথে’ পুজোর সামগ্রী বিক্রি করছিলেন তাঁরা। সেই ‘অপরাধে’ই কপালে জুটল ‘সাজা’। রামমন্দির চত্বর থেকে আট বিক্রেতাকে একটি পার্কের মধ্যে তুলে নিয়ে গিয়ে চরম হেনস্তা করা হল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, কাঠফাটা রোদের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে তাঁদের ওঠবস করানো হয়েছে। এমনকী মাথা ও হাত নীচের দিকে করিয়ে পার্কের একটি দেওয়ালে পায়ের ভরে ‘শীর্ষাসন’ করিয়েও রাখা হয়। লাঠি হাতে উর্দি পরা পুলিশকর্মী ও পুর কর্তৃপক্ষ সেই ‘সাজা’র তদারকি করেছেন। ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু নিন্দার ঝড়। উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিরোধীরাও। কংগ্রেসের আক্রমণ, অযোধ্যার পুর কর্তৃপক্ষের এই ‘তালিবানি আচরণে’ই বিজেপির একনায়ক মানসিকতা প্রকাশ্যে এসে পড়েছে।
উত্তরপ্রদেশে হামেশাই মহিলাদের কটূক্তি করা ‘রোমিও’দের এইভাবে প্রকাশ্যে ওঠবস করিয়ে সাজা দিয়ে দেখা যায় পুলিশকে। কিন্তু রামমন্দিরের বাইরে পুজোর সামগ্রী বিক্রি করার জন্য যেভাবে আট ব্যক্তিকে হেনস্তা করল প্রশাসন, তা বেনজির। পুর কর্তৃপক্ষের তরফে সম্প্রতি মন্দির চত্বরে দখলদারির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা হয়েছে। আর সেই অছিলাতেই ‘রামপথ’ থেকে আট বিক্রেতাকে তুলে নিয়ে যায় পুরসভার এনফোর্সমেন্ট টিম। কাছেই পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত একটি পার্কে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশকর্মীদের উপস্থিতিতে সেখানেই চলে অত্যাচার। ‘সাজাদানে’র ঘটনার ভিডিও করা হয়। সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। চাপের মুখে পড়ে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন কমিশনার জয়েন্দ্র কুমার।
আগামী ২৫ নভেম্বর রামমন্দিরের ধ্বজা উত্তোলন করতে অযোধ্যা আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে এই ঘটনায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় চরমে।