কোল্ডরিফ সিরাপ লেখার জন্য ১০ শতাংশ কমিশন, জেরায় স্বীকার ধৃত চিকিৎসকের
বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
ভোপাল: প্রেসক্রিপশনে শিশুদের জন্য কোল্ডরিফ সিরাপ লেখার জন্য তিনি ১০ শতাংশ কমিশন পেতেন। সেই কমিশন দিত সংশ্লিষ্ট ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। কাফসিরাপের বোতল পিছু মিলত আড়াই টাকা। কাশির সিরাপ খেয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় ধৃত চিকিৎসক প্রবীণ সোনি পুলিশি জেরায় একথা স্বীকার করেছেন। পুলিশের কাছ থেকে একথা জানার পর ধৃত ওই চিকিৎসকের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশের এক জেলা আদালত।
আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, কোল্ডরিফ খেয়ে শিশুদের মূত্র ও কিডনির সমস্যা তৈরি হচ্ছে জেনেও ওই কাশির ওষুধ লেখা জারি রেখেছিলেন ধৃত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রবীণ সোনি সহ আরও অনেক চিকিৎসক। শিশুদেহে বিরূপ প্রভাব ফেলছে, তার প্রমাণ সামনে আসার পরও তারা সেকাজ বন্ধ করেননি। তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য সংশ্লিষ্ট সিরাপ লেখা ঠিক নয় জেনেও ২৪ আগস্ট থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত বহু শিশুর জন্য কোল্ডরিফ লেখেন চিকিৎসক সোনি। পুলিশের রেকর্ড বলছে, শিশুমৃত্যুর প্রথম ঘটনাটি ঘটে ২৯ আগস্ট। একই ধরনের সমস্যা নিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর আরও একটি শিশু মারা যায়। এরপরই মূত্র বন্ধ হয়ে ও কিডনি বিকল হয়ে একের পর এক শিশুর মৃত্যু হতে শুরু করে।
সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ডিরেক্টর জেনারেল অব হেল্থ সার্ভিসেস নির্দেশিকা জারি করে বলেছিল, চার বছরের কম বয়সি শিশুদের ‘ফিক্সড ডোজ কম্বিনেশন’ (এফডিসি) ওষুধ দেওয়া যাবে না। সেই স্পষ্ট নির্দেশিকা সত্ত্বেও জেনেশুনে অত ছোট শিশুদের ওই ওষুধ লিখেছিলেন চিকিৎসক সোনি। ধৃত চিকিৎসকের আইনজীবী পালটা যুক্তি দিয়ে আদালতে বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে সর্দি-কাশির সমস্যায় ওই ওষুধ লিখে আসছেন তাঁর মক্কেল। বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতির কথা তাঁর জানা ছিল না। ওষুধের গুণমান খারাপের দায় চিকিৎসকের নয়। তবে আদালত সেই যুক্তি মানতে চায়নি। বিচারক বলেন, প্রবীণ চিকিৎসক হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের স্পষ্ট নির্দেশিকা অমান্য করেছেন সোনি। শিশুদেহে সমস্যা তৈরি হচ্ছে জেনেও তিনি ওই ওষুধ লেখা বন্ধ করেননি। ধৃত চিকিৎসকের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।