নীতীশের আপত্তি সত্ত্বেও একতরফা প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা বিজেপির
বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: নীতীশ কুমার ক্ষুব্ধ। আসন সমঝোতা নিয়ে আরও আলোচনা চেয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর দাবি অগ্রাহ্য করে মঙ্গলবার বিজেপি দিল্লি থেকে একতরফাভাবে প্রথম দফার ৭১ জন প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে। এই তালিকায় এমন একাধিক আসনে বিজেপি নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে, যে আসনগুলিতে প্রার্থী দেওয়ার দাবি করেছিল নীতীশ কুমারের দল। এমনকি জেডিইউয়ের কোটার আসন চিরাগ পাসোয়ানকে দেওয়া হয়েছে। নীতীশকুমার তাঁর দলকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারা যেন আবার বিজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বিশেষ কিছু আসনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার কথা বলেন। যে তালিকায় রয়েছে সোনবর্ষা, তারাপুর,রাজগীর, মোরওয়ালের মতো আসন। সোনবর্ষা আসন চিরাগ পাসোয়ানকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নীতীশের দলের রত্নেশ সাদা সেই আসনের শুধু যে বিধায়ক তাই নয়, তিনি সরকারের মন্ত্রী। এই ঘটনায় নীতীশ এতই ক্ষুব্ধ যে, সোমবার রাতে রত্নেশ সাদাকে প্রতীক দিয়ে বলেছেন, ওই আসন থেকেই তুমি মনোনয়ন পেশ করবে। অর্থাৎ, আনুষ্ঠানিকভাবে ওই আসনে এনডিএ জোটের চিরাগ পাসোয়ানের দলের প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন। কিন্তু মীমাংসা না হলে এই আসনে এনডিএ বনাম এনডিএ প্রার্থীর লড়াই হবে। যা মেটাতে মরিয়া বিজেপি।
বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের জন্য নীতীশ কুমার দায়িত্ব দিয়েছিলেন সঞ্জয় ঝা, রাজীব রঞ্জন লালন এবং বিজয়েন্দ্র যাদবকে। যখন আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায় বিজেপি এবং জেডিইউ উভয়েই ১০১টি করে আসনে লড়াই করবে, তখন নীতীশকুমার ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সোমবার রাতে তিনি ডেকে পাঠান বিজয়েন্দ্র যাদবকে। তাঁকে প্রশ্ন করেন, দলের আসন নিয়ে আপস করা হল কেন? কার নির্দেশে বিজেপির ১০১ -১০১ ফরমুলায় রাজি হয়ে গেলে তোমরা? আবার আসন সমঝোতার বৈঠক করো। আমাদের একটা হলেও বেশি আসন চাই। আর একটিও জয়ী বিধায়কের আসন ছাড়া হবে না। এই বার্তা রাতেই বিজেপিকে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বিজেপি দিল্লির কর্তারা আর কোনও বদল করতে রাজি নয়। তারা সবুজ সংকেত দিয়ে দেয়। মঙ্গলবার ৭১ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। নীতীশ কুমারের কাছে বার্তা যাচ্ছে যে, বিজেপির কাছে এখন সবথেকে কাছের জোট শরিক চিরাগ পাসোয়ান। নীতীশের দলকে বিজেপি এখন আর বড় ভাই মনে করে না। আসন সমঝোতাতেও সেটা প্রমাণিত। দলকে রক্ষা করতে তাই নীতীশ কুমার যে কোনও সময় বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদি বিজেপি আপস না করে, তাহলে ভোটের পরেও নীতীশ বিগড়ে যেতে পারেন। তাই চরম বিপাকে বিজেপি। কিন্তু বিজেপি বিহার নেতৃত্ব মনে করছে, এখন চিরাগ পাসোয়ানের নতুন উত্থান ঘটছে। তাই নীতীশের অস্তমিত ইগোর তুলনায় বেশি কাছে রাখা দরকার চিরাগকে। আর এটা বুঝতে পেরেই জেডিইউ প্রবল ক্ষুব্ধ।