মানবিক মুখ্যমন্ত্রী, দুর্যোগে মৃত মাথাভাঙায় দুই পরিবারের সদস্য পেল হোমগার্ডে নিয়োগ
বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
সন্দীপ বর্মন, মাথাভাঙা (জোরশিমূলি): মাথাভাঙার জোরশিমূলি গ্রামে জলঢাকা নদীর জলে ভেসে যাওয়া দু’জনের পরিবারের একজন করে সদস্যকে হোমগার্ডের চাকরি দিল রাজ্য সরকার। সোমবার নাগরাকাটায় মৃত মৃন্ময় বর্মনের মা জোৎস্না বর্মন ও দয়ারাম বর্মনের ছেলে মৃণাল বর্মনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মাথাভাঙা থানায় এসে নিয়োগপত্র জমা দেন তাঁরা। ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লক্ষ করে টাকাও পেয়েছে দু’টি পরিবার। শোক ভুলতে না পারলেও মুখ্যমন্ত্রীর মানবিকতায় খুশি দুই পরিবারের লোকজন।
মঙ্গলবার জোরশিমূলির আমবাড়ির মৃত দয়ারাম বর্মনের ছেলে মৃণাল বর্মন বলেন, বাবাকে হারিয়েছি। কিন্তু মানবিক মুখ্যমন্ত্রী আমাদের জন্য যা করেছেন আমরা খুশি। ছেলেকে হারানোর শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি জোৎস্না বর্মন। এদিন ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে বারবার চোখের জল মুছে বলছিলেন, ছেলেকে তো ফিরে পাব না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানবিক দৃষ্টিতে দেখে আমাদের চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। আমরা কৃতজ্ঞ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। এখনও গোটা জোরশিমূলি গ্রাম বিধস্ত অবস্থায়। চারদিকে ডোবায় জমা জলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাড়িঘর গোছানোর কাছ করছেন বাসিন্দারা। মঙ্গলবার বাড়ির দাওয়ায় বসে ছিলেন মৃত দয়ারাম বর্মনের পরিবারের লোকজন। কথা প্রসঙ্গে মৃত দয়ারামের শ্যালিকা মণিবালা বর্মন বলেন, সেদিন হুহু করে জলঢাকার জল নদীর স্পার টপকে বাড়িতে ঢুকতে শুরু করে। ভেলায় চেপে দ্রুত পালানো শুরু করেছিল সকলে। বৃদ্ধ দয়ারাম কয়েকটি গবাদিপশু নিয়ে উঁচু জায়গার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়েছিলেন। বাড়ি থেকে কিছুটা এগনোর পর তিনি বানের জলে ভেসে যান। পরের দিন তাঁর মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়। অপরদিকে, মৃন্ময়কে তাঁর বাবা-মা একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির ছাদে রেখে এসেছিল। সে আবারও বাড়িতে আসার সময়ে জলের তোড়ে ভেসে যায়। নদী পাশ্ববর্তী একটি ডোবা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
আপনজন হারানো দু’টি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। এলাকার বাসিন্দারাও রাজ্য সরকারের এই ভূমিকায় খুশি। মাথাভাঙা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজিবুল হাসান বলেন, মানবিক মুখ্যমন্ত্রী দু’টি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটা আমাদের কাছেও খুশির খবর। যে মা ছেলেকে হারিয়েছে, তাঁর যন্ত্রণা বুঝেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমরাও ওই এলাকার মানুষের পাশে রয়েছি। সবরকম সহায়তা করা হচ্ছে সবাইকে।
মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ গড়াই বলেন, আমাদের এলাকার দু’জনকে স্পেশাল হোমগার্ডে চাকরি দেওয়া হয়েছে। নিয়ম মেনে ওদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।