• বালির গাড়ি আটকে ‘তোলাবাজি’! মহম্মদবাজার থানার দু’জন পুলিশ অফিসার সাসপেন্ড
    বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: বালির গাড়ির পাকড়াও করে তা থেকে অবৈধ উপায়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগে দুই পুলিশ অফিসারকে সাসপেন্ড করা হল। সাইফুল ইসলাম ও কিরণ মণ্ডল নামে অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার দুই পুলিশ অফিসার মহম্মদবাজার থানায় কর্মরত ছিলেন। মঙ্গলবার দুই অফিসারকে সাসপেন্ডের বিষয়টি স্বীকার করে জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ জানান, দুই অফিসারের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বীরভূম জেলাজুড়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। 

    মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বীরভূম জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে জেলা পুলিশ। পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘সমাজমাধ্যমের কিছু ভিডিও আমাদের নজরে আসে। যেখানে দেখা যায় মহম্মদবাজার থানার দুই অফিসার এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। তৎক্ষণাৎ ওই দুই অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। দু’জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। বীরভূম জেলা পুলিশ দুই অফিসারের এই কাজের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি পোষণ করে এবং খুবই স্পষ্টভাবে এইরূপ কাজের নিন্দা করে।’

    ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার বিকেলে। বীরভূম জেলা ট্রাক অ্যান্ড টিপার অপারেটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আনাস আহমেদ সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানেই মহম্মদবাজার থানার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন তিনি। পাশাপাশি, পুলিশের টাকা চাওয়ার ‘প্রমাণ’ হিসেবে একটি অডিও রেকর্ডিং এবং টাকা নেওয়া ‘প্রমাণ’ হিসেবে একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আনেন। আনাস সাহেব জানান, গত ২৩সেপ্টেম্বর তাঁদেরই সংগঠনের একটি ট্রাক মালিকের বালিবোঝাই দু’টি গাড়ি পাকড়াও করে মহম্মদ থানার পুলিশ। দু’টি গাড়ির চালানে কিছু সমস্যা ছিল। তাই গাড়ি দু’টি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। গাড়ি দু’টি ছাড়ানোর জন্য ট্রাকের মালিককে ফোন করেন ওই দুই পুলিশ অফিসার। দু’টি গাড়ির জন্য ৭০হাজার টাকা করে মোট ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার দাবি করা হয়। 

    যে অডিও রেকর্ডিংটি(সত্যতা যাচাই করেনি বর্তমান) সংগঠনের তরফে প্রকাশ্যে আনা হয়েছে, তাতে এক ব্যক্তিকে দরাদরি করতে দেখা যাচ্ছে। ফোনের এক প্রান্তের ব্যক্তি বলছেন, ‘গাড়ির পেপার আর পুরো টাকাটা আমাকে দিয়ে যান। আমি রিপোর্ট পাঠিয়ে দেব।’ অন্য প্রান্তের ব্যক্তি বলেন, ‘ষাট হাজার টাকাই দেব তো?’ জবাব আসে, ‘হবে না। ৭০-ই লাগবে। আমি টাকাটা একা খাব না। মনে রাখবেন। আমার আরও দুটো লোক আছে। আপনি লোকাল লোক বলে পাঁচ হাজার টাকা করে ছেড়ে দিয়েছি।’ ট্রাকমালিক সংগঠনের দাবি, এই রেকর্ডিংটি ট্রাকের মালিকের সঙ্গে এক পুলিশ অফিসারের। তবে, এই ঘটনায় পুলিশ তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন ট্রাকমালিকরা। যদিও তাঁদের দাবি, এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। জেলাজুড়েই তাঁদের পুলিশি অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এই ঘটনা বন্ধ হোক।
  • Link to this news (বর্তমান)