• গাছে পেরেক ঠুকে লাগানো যাবে না বিজ্ঞাপনী ব্যানার-হোর্ডিং, নির্দেশ ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের
    বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রামে জঙ্গলে গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড, ফেস্টুন, ব্যানার লাগানো হচ্ছে। তা নিয়ে পরিবেশপ্রেমীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। তাই এবার গাছ বাঁচাতে ঝাড়গ্রাম বনবিভাগ কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। জেলায় রাস্তার দু’পাশের কোনও গাছে পেরেক ঠুকে ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো যাবে না। পাশাপাশি, জঙ্গলের ভিতরে কোনওরকম জঞ্জাল বা বর্জ্য ফেললে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, জঙ্গলের গাছে পেরেক ঠুকে বিলবোর্ড, পোস্টার, ব্যানার লাগানো যাবে না। জঙ্গলের ভিতরে জঞ্জাল বা বর্জ্য ফেলা যাবে না। নির্দেশিকা অমান্য করলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    ঝাড়গ্ৰাম জেলার বৃক্ষপ্রেমীরা বিজ্ঞাপনে গাছ ঢেকে যাওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন। পেরেক দিয়ে বিজ্ঞাপনী পোস্টার লাগানোর পাশাপাশি গাছের গায়ে রং করে দেওয়া হচ্ছে। রাস্তার দু’পাশের জঙ্গলের বড় বড় গাছগুলি বিজ্ঞাপনদাতাদের নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছে। শহর লাগোয়া কলাবনীর জঙ্গল ও দহিজুড়ি থেকে বেলপাহাড়ী যাওয়ার রাস্তার দু’পাশে গাছের গায়ে বিজ্ঞাপন লাগানো হচ্ছে। সহজেই পথচলতি মানুষ ও পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিজ্ঞাপনদাতারা এই কাজ করছেন। গাছে পেরেক ঠুকলে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। ক্ষতস্থানে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। দুর্বল হয়ে পড়া গাছ ঝড়-বৃষ্টিতে সহজে ভেঙে পড়ে। জেলাজুড়ে গাছ লাগানো ও বাঁচানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রচার চালানো হয়। প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন  বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি করছে। তারপরেও একশ্রেণির বিজ্ঞাপনদাতা গাছে পেরেক ঠুকে হোর্ডিং থেকে ব্যানার, পোস্টার লাগাচ্ছেন। পাশাপাশি, একশ্রেণির মানুষ গাড়িতে করে জঞ্জাল, আবর্জনা নিয়ে গিয়ে জঙ্গলের ভিতরে ফেলে আসছে। এতে জঙ্গলের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। দূষিত বর্জ্য খেয়ে বনের পশু-পাখিদের মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। বনবিভাগের এক আধিকারিক বলেন, জঙ্গলে বর্জ্য ফেলতে আসা বেশকিছু গাড়ি আমরা আটক করেছি। বিষয়টি নিয়ে বনবিভাগ প্রচার চালাচ্ছে। জেলার পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী শ্যামসুন্দর মাহাত বলেন, জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়া রাস্তার দু’পাশের গাছে দীর্ঘদিন ধরেই পেরেক ঠুকে ব্যানার, পোস্টার লাগানো চলছে। রাজনৈতিক দলের শোভাযাত্রা হলে গাছের গায়ে পেরেক দিয়ে দলীয় পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়। শহরলাগোয়া কলাবনীর জঙ্গলের রাস্তার দু’পাশের গাছগুলিতেও এভাবে ব্যানার ঝোলাতে দেখা যাচ্ছে। গাছ ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের এই উদ্যোগ সময়োচিত। ঝাড়গ্রাম জেলা সাহিত্য পরিষদের সদস্য ধনঞ্জয় মাহাত বলেন, বৃক্ষরোপণ থেকে শুরু করে গাছ বাঁচানোর জন্য জেলায় বিভিন্ন প্রচার চালানো হচ্ছে। আমরা এবিষয়ে স্কুল-কলেজে প্রচার চালাচ্ছি। গাছে পেরেক লাগানোর বিষয়টি কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। বনবিভাগ উদ্যোগ নিচ্ছে ঠিকই, কিন্ত গাছের সুরক্ষায় জেলার সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)