• হাতুয়াড়া ক্যাম্পাসে সব বিভাগ স্থানান্তরের দাবিতে কর্মবিরতি
    বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়েছে। যদিও দেবেন মাহাত গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সদর ক্যাম্পাস থেকে একটি বিভাগও হাতুয়াড়ায় স্থানান্তরিত হয়নি। ঘটনায় রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভোগান্তি এবং নিজেদের নিরাপত্তার ইস্যুতে প্রশ্ন তুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্নরা। ক্লাস বয়কট করে পড়ুয়ারাও ইন্টার্নদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মঙ্গলবার এই কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিন ছিল। ইন্টার্নদের এই কর্মবিরতির জেরে সদর ক্যাম্পাসের চিকিৎসা পরিষেবায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে কার্যত মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ ইন্টার্ন ও পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা সারলেও ইতিবাচক কোনও ইঙ্গিত অবশ্য এখনও মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে ইন্টার্নদের সাফ কথা, এবার প্রতিশ্রুতিতে চিড়ে ভিজবে না। 

    মেডিকেলের অধ্যক্ষ সব্যসাচী দাস বলেন, ইন্টার্নদের দাবি ন্যায্য। তাঁদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি। তবে একবারে সমস্ত বিভাগ স্থানান্তরিত করা সম্ভব নয়। সিটি স্ক্যান পরিষেবা চালু হলে পর্যায়ক্রমে সার্জারি সহ একাধিক বিভাগ স্থানান্তরিত করা হবে। এক্ষেত্রে অবশ্য কিছুটা সময় লাগবে। 

    আর জি করের ঘটনার পর প্রথমবার সদর ক্যাম্পাস থেকে বিভিন্ন বিভাগ স্থানান্তরিত করার দাবি ওঠে। সেই দাবি মেনে কর্তৃপক্ষের তরফে নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছিল। যদিও সময় অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত একটি বিভাগও স্থানান্তরিত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে যথেষ্টই বিপাকে পড়তে হচ্ছে ইন্টার্নদের। তাঁদের অভিযোগ, হাতুয়াড়া ক্যাম্পাসে আউটডোরের ডিউটি শেষ করে সদরে ছুটতে হয়। দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। শুধু দিনে নয়, জরুরি প্রয়োজনে রাতেও সদর ক্যাম্পাসে ছুটতে হয়। ফলে মহিলা ইন্টার্নদের নিরাপত্তা ইস্যুতে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।  তাঁদের আরও অভিযোগ, সদর ক্যাম্পাস বহু পুরনো। অথচ হাতুয়াড়া ক্যাম্পাস যথেষ্টই আধুনিক। তবুও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ স্থানান্তরিত করার ক্ষেত্রে এখনও টালবাহানা চলছে। শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জেরে একবার হাতুয়াড়া আর একবার সদর ক্যাম্পাসে ছুটতে হচ্ছে রোগীর পরিবারের সদস্যদের। সেইসঙ্গে নিরাপত্তাহীনতার মাঝেও রাতের আঁধারে ছ’কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সদর ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে হয় ইন্টার্নদের। 

    সোমবার বিকেল থেকে ইন্টার্ন সহ পড়ুয়ারা অবস্থানে শামিল হন। এদিনও তাঁদের অধ্যক্ষের অফিস ঘরের বাইরে অবস্থান করতে দেখা যায়। তাঁদের একটাই বক্তব্য, দাবি পূরণ না হলে কর্মবিরতি চলবেই। ইন্টার্ন তেজাস্বিতা বলেন, দুই ক্যাম্পাসের মধ্যে দূরত্ব অনেক। রাতে যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত গাড়ি মেলে না। স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তাজনিত প্রশ্ন সব থেকে বড় আকারে দেখা দিয়েছে। হাতুয়াড়া ক্যাম্পাসে আউটডোর সহ অস্ত্রোপচার ও রেসপিরেটরি ওয়ার্ড রয়েছে। সেইসঙ্গে ডিজিটাল এক্স-রে ও রক্তের নমুনা পরীক্ষা হয়। বাকি সমস্ত পরিষেবা পেতে রোগীর পরিবারের সদস্যদের সদর ক্যাম্পাসে ছুটতে হয়। এটা শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার ফল। 
  • Link to this news (বর্তমান)