• রেলের আন্ডারপাসে ৫ মাস ১০ ফুট জল জমে, মুরারইয়ের দুর্ভোগ নিয়ে ডেপুটেশন
    বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: বেহাল নিকাশির কারণে মুরারইয়ে রেলের আন্ডারপাসে জমে ১০ ফুট সমান জল। যার জেরে প্রায় পাঁচ মাস ধরে বন্ধ  আন্ডারপাস। বিকল্প পথ বলতে লেভেল ক্রসিং গেট। কিন্তু ঘনঘন ট্রেন চলাচলে বেশিরভাগ সময়ে বন্ধ থাকে সেই গেট। যার ফলে থমকে যাচ্ছে জনজীবন। ব্যাপক যানজটে ভুগছে মানুষ। কবে এই সমস্যার হাত থেকে নিস্তার মিলবে, সেই প্রশ্নই এখন মানুষের মনে। রেলের উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। 

    ঝাড়খণ্ড ও মুর্শিদাবাদ ঘেঁষা মুরারই স্টেশন। বর্ধমান-সাহেবগঞ্জ লুপ লাইন মুরারইয়ের বুক চিরে চলে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম এই রুট দিয়ে প্রচুর প্যাসেঞ্জার ট্রেন ও মালগাড়ি যাতায়াত করে। প্রতিদিনই রেল গেটে থমকে যেত জনজীবন। দীর্ঘক্ষণ রেলগেট বন্ধ থাকায় দু’ ধারে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ত সাইকেল, ভ্যান, মোটরবাইক। বিকল্প রাস্তা না থাকায় যানজট তীব্র হতো। সমস্যার সমাধানে রেল গেটের অদূরে আন্ডারপাস তৈরি হয়। গত ২ মার্চ রাতে লেভেল ক্রসিং গেট বন্ধ করে যানবাহন ও মানুষের চলাচলের জন্য অসম্পূর্ণ আন্ডারপাস খুলে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বৃষ্টিতে আন্ডারপাসে কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে পড়ে। যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। চরম সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। এই নিয়ে রেলের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্থানীয় বিধায়ক থেকে প্রশাসনিক কর্তারা। অবশেষে ২৪ মে আন্ডারপাস বন্ধ করে ফের রেলগেট খুলে দেওয়া হয়। ফলে সেই যানজট ফিরে এসেছে। 

    স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন রেল গেটের যানজটে আটকে স্কুল, কলেজ, অফিস বা অন্যান্য জরুরি কাজ পণ্ড হচ্ছে। সময়ের অপচয় হচ্ছে। তিতিবিরক্ত স্থানীয় মানুষরা সোমবার হাওড়ার গিয়ে চিফ প্যাসেঞ্জার ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজার রৌশন কুমারের সঙ্গে দেখা করে দ্রুত আন্ডারপাস চালু সহ বেশ কিছু ট্রেনের স্টপেজের দাবি জানান। নাগরিক মঞ্চের পক্ষে অনিন্দকান্তি সিনহা, রাহুল কানু, নূর আলমরা বলেন, যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব করতে রেল আন্ডারপাস করেছে। কিন্তু তা অপরিকল্পিত হওয়ায় মানুষ ব্যবহার করতে পারছে না। বর্ষা চলে গেলেও এখনও ১০ ফুট সমান জল দাঁড়িয়ে। রেল আন্ডারপাস দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু পাঁচ মাস হতে চললেও এখনও পর্যন্ত রেলের কোনও হেলদোল দেখতে পাচ্ছি না। তাই সিপিটিএমের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। সিটিপিএম জানিয়েছেন, আণ্ডারপাসের নিকাশি সমস্যা দূর করা সহ নানা কাজের জন্য ৫ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকার টেন্ডার করা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে বলছে। কিন্তু কবে, তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে নাগরিক মঞ্চের পক্ষ থেকে মুরারইয়ে কুলিক, হাওড়া-গয়া, সাহেবগঞ্জ হাওড়া ইন্টারসিটি, কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসের স্টপেজের দাবি ছাড়াও করোনা কালে বন্ধ হয়ে যাওয়া বর্ধমান-মালদা টাউন প্যাসেঞ্জাব ট্রেনটি পুনরায় চালু করার দাবি জানানো হয়েছে।  মুরারই নিত্য রেলযাত্রী সংঘের পক্ষ জগন্নাথ দত্ত বলেন, আন্ডারপাস বন্ধ থাকায় চরম সমস্যায় পড়েছেন মানুষ। হঠাৎ করে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে মুরারই গ্রামীণ হাসপাতাল বা রামপুরহাট মেডিকেলে নিয়ে যেতে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করুক রেল। 
  • Link to this news (বর্তমান)