নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উত্তর কলকাতার স্ট্যান্ড ব্যাঙ্ক রোডের কাশী মিত্র ঘাটে বাঁশ ও মাটির ব্যবসাকে ঘিরে পরিস্থিতি ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। যে কোনও সময়ে সেখানে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসীরা।
তাঁরা জানিয়েছেন, দূর‑দূরান্তের বিভিন্ন জেলা থেকে রোজ নৌকা বোঝাই বাঁশ এসে নামে এই গঙ্গার ঘাটে। এরপর প্রায় রোজই সেই বাঁশ টেনে তোলা হয় ঘাটের উপরে। ফলে বাঁশে লেগে থাকা গঙ্গার কাদামাটি ঘাটের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তার উপর নৌকা করে আসা মাটিও রোজ মুটিয়াদের মাধ্যমে ওই ঘাট থেকে তুলে লরি করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। এসবের কারণে ওই ঘাট ও তার আশপাশ চত্বরের পরিস্থিতি সঙ্গীন আকার নিচ্ছে। ফলে ঘাটের প্রতিটি সিঁড়িই প্রায় রোজই একপ্রকার মরণফাঁদের চেহারা নিয়ে বসে থাকে।
এলাকাবাসীদের বক্তব্য, বাঁশ ও মাটির এই ব্যবসার জেরে শহরের ব্যস্ত এই গঙ্গার ঘাটটি ক্রমেই মানুষের ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। গঙ্গায় স্নান করতে আসা মানুষজনকে পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায়। অথচ ওই ঘাটে রোজই আশপাশ চত্বরের বহু মানুষ আসে। ঘাটের করুণ পরিস্থিতি দেখে অনেকে আবার চলেও যায় অন্য ঘাটে। উত্তর কলকাতার এই ঘাট লাগোয়া চত্বরেই রয়েছে প্রাচীন কাশী মিত্র শ্মশান ঘাট। সেখানে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোজই বিভিন্ন মৃতদেহ দাহ করার জন্য আনা হয়। অনেকক্ষেত্রে মৃতদেহের সঙ্গে আসা মানুষজনকেও দেখা যায়, ওই ঘাটের পরিবর্তে অন্য ঘাটে গিয়ে স্নান করতে ও বিশ্রাম নিতে।
কথা হচ্ছিল রবীন্দ্র সরণির এক বাসিন্দা সঞ্জয় দাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাঁশ ও মাটির ব্যবসা নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তার জেরে একটি গঙ্গার ঘাট যদি সাধারণের ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে ওঠে, তাহলে তাকে তো কোনওমতেই সমর্থন করা যায় না। ওই গঙ্গার ঘাট যাতে সাধারণের ব্যবহারের উপযুক্ত হয়ে ওঠে, সেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার। একটি মৃতদেহের সঙ্গে আসা কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা সাধন মণ্ডল নামে এক মাঝবয়সি ব্যক্তিও বলেন, পরিস্থিতি যা, তাতে এই ঘাটে নামা মানে প্রাণ হাতে করে নামা। তাই এই ঘাটটির স্বাভাবিক পরিস্থিতি দ্রুত ফিরিয়ে আনা দরকার।
স্থানীয় অনেক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে নানা সময়ে নানা মহলে বহুবার দরবার করেও কাজ কিছু হয়নি। ফলে ওই ঘাটের পরিস্থিতি দিনকে দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। কলকাতা পুরসভার ১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখব। সাধারণ মানুষ যাতে কোনও সমস্যার মধ্যে না পড়ে, সেটা অবশ্যই দেখা দরকার।