ভবানীপুরে মমতাকে এক লাখ ভোটে জেতানোর শপথ বিজয়া সম্মিলনিতে, ভোটার তালিকায় নজর দেওয়ার নির্দেশ দলনেত্রীর
বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভবানীপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের সম্ভাব্য প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজয়া সম্মিলনির মঞ্চ থেকে তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের বক্তব্যে তা স্পষ্ট। এমনকী দল সুপ্রিমোকে এক লক্ষ ভোটে জেতানোর শপথও নিলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। বিপর্যয় বিধ্বস্ত পাহাড়-ডুয়ার্স পুনর্গঠনের কাজে উত্তরবঙ্গে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকেই মোবাইল ফোনে বক্তব্য রেখে ভবনীপুরের তৃণমূল কর্মীদের কাছে মমতার নির্দেশ, ভোটার তালিকার বিষয়ে খুব ভালোভাবে নজর রাখতে।
গত ৫ অক্টোবর থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনি। জেলা, বিধানসভা, ব্লক, অঞ্চল ভিত্তিক বিজয়া সম্মিলনি চলছে। যেখানে তৃণমূলের সর্বস্তরের কর্মীরা এক জায়গায় এসে ২৬’এর বিধানসভা নির্বাচনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের শপথ নিচ্ছেন। এই পর্বে মঙ্গলবার ভবানীপুর বিধানসভায় তৃণমূলের বিজয়া সম্মলিনি ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের বিধানসভা কেন্দ্র হওয়ার ভবানীপুরের বিজয়া সম্মিলনি নিয়ে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের তুমুল আগ্রহ ও কৌতূহল ছিল। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মোবাইলে ফোন করেছিলেন মমতা। লাউডস্পিকারে ফোন দিয়ে মমতার বক্তব্য শোনানো হয় ধনধান্য অডিটোরিয়ামে উপস্থিত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। সকলকে বিজয়া ও আসন্ন কালী পুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, ছট পুজোর শুভেচ্ছা জানান মমতা। সেইসঙ্গে নিজের ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে বেশ কিছু বার্তাও দিয়েছেন। এখন এসআইআরের প্রস্তুতি পুরোমাত্রায় শুরু করে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। এই অবস্থায় মমতা নির্দেশ দেন, সামনে লক্ষ্য রাখবেন, যদি কোনওকম ভোটার লিস্ট নতুন করে হয়, তাহলে প্রত্যেককে আবার নতুন করে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। সেক্ষেত্রে বিএলএদের দায়িত্ব খুব বেশি। কর্মীরাই দলের সম্পদ। সবাইকে নিয়ে সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। এই আবর্তেই এসআইআর নিয়ে বড়সড় আন্দোলনে নামছে জোড়াফুল শিবির। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে আগামী ২ নভেম্বর শহিদ মিনারের সমাবেশের মধ্যে দিয়ে যা শুরু হবে।
অপরদিকে ভবানীপুরে বাইরের থেকে বেশ কিছু মানুষ আসছেন, এমন তথ্য পেয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, আমি দেখছি অনেক এলাকায় গরিব মানুষের বস্তি ভেঙে বড় বাড়ি তৈরি হচ্ছে। আমি এটাকে সমর্থন করি না। আমাদের ভোটারদের আপনারা তাড়িয়ে দিচ্ছেন। পরিকল্পনা করে ভবানীপুরকে বহিরাগতদের দিয়ে ভরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা বাংলায় থাকেন, তাঁদের কথা বলছি না। কিন্তু যাঁরা হঠাৎ করে বাইরে থেকে এসে টাকা খরচ করে জায়গা কিনে বাড়ি তৈরি করছেন, তাঁরাই বহিরাগত। যাঁরা ফ্ল্যাট কিনছেন, তাঁরা জল পাচ্ছেন না, নিকাশি ব্যবস্থা পাচ্ছেন না।
ভবানীপুরে দলের জনপ্রতিনিধি, দলীয় কর্মীদের প্রতি মমতার আবেদন, গরিব হোক বা উচ্চবিত্ত, যে কোনও ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষ হোন না কেন, সব মানুষের পাশে থাকতে হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। এদিন বিজয়া সম্মিলনির শুরুতেই ভবানীপুর কেন্দ্রিক বিশেষ বার্তা দেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। তিনি বলেন, সম্ভবত ভবানীপুরে প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে বিপুল ভোটে জেতাতে হবে। চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। আর অন্য জায়গায় যে কেন্দ্রে যাঁরা কাছে প্রতীক বা সিম্বল থাকবে, তিনিই প্রার্থী। ওই প্রার্থীকে সমর্থন দিতে হবে বাকি সকলের। সেখানে কোনও বিরোধিতা থাকবে না। এই সূত্র ধরেই আরও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, এক লক্ষ ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতাতে হবে। আজ থেকে লড়াই শুরু। ভবানীপুরের হৃদয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।