• ভোট এলেই ইডি আসে, কিন্তু কিছু পায় না, মানুষই আমার সার্টিফিকেট! অফিস, রেস্তরাঁয় তল্লাশির মাঝে তোপ সুজিতের
    আনন্দবাজার | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • ভোট এলেই ইডি আসে। দুর্নীতির কোনও প্রমাণ মেলে না। তবু আসে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নিশানা করে এমনটাই মন্তব্য করলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। সকালে সল্টলেকে তাঁর দফতর এবং রেস্তরাঁয় ইডি হানা দিয়েছে। এই প্রতিবেদন প্রকশের সময়ও চলছে তল্লাশি। বেলার দিকে তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন সুজিত। দাবি, ইডির এই হানা আসলে ভোটের আগে বিরোধী নেতাকে ‘রাজনৈতিক ভাবে আক্রমণের চেষ্টা’।

    পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে শুক্রবার সকাল সকাল কলকাতার একাধিক জায়গায় হানা দেয় ইডি। সল্টলেক সেক্টর ওয়ানের একটি ভবনেও কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা গিয়েছেন। সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ওই ভবনে সুজিতের দফতর রয়েছে। সেখানে সকাল থেকে তল্লাশি চলছে। এ ছাড়া, দমকলমন্ত্রীর একটি রেস্তরাঁতেও গিয়েছে ইডি। গোলাহাটায় তাঁদের একটি ধাবায় চলছে তল্লাশি। এ প্রসঙ্গে সুজিত বলেন, ‘‘এরা প্রত্যেক বারই ভোট এলে এটা করে থাকে। বিশেষ করে যারা বিরোধী দলের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বাড়ি, অফিস সব জায়গায় যায়। আমার রেস্তরাঁতেও গিয়েছে। এটা নতুন নয়। এর আগেও রেড করা হয়েছে। কিছু তো পায়নি। আসলে ভোটের আগে চাপ তৈরি করতে এটা করা হচ্ছে।’’

    সুজিতের দফতরের পাশাপাশি দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা কাউন্সিলর নিতাই দত্তের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। নিতাই বরাবর ‘সুজিত-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। ইডির বিরুদ্ধে তোপ দাগতে গিয়ে দমকলমন্ত্রী তাঁর প্রসঙ্গও তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওরা নিতাইয়ের বাড়িতেও গিয়েছে। কিছু পায় না। তার পরেও আসে। এখানে তো ওদের কোনও লোকজন নেই। এটা টার্গেট করে করছে। রাজনৈতিক ভাবে আক্রমণ হচ্ছে।’’ তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও প্রমাণ পাওয়া যাবে না, দাবি সুজিতের। জানিয়েছেন, এলাকার মানুষই তাঁর ‘সার্টিফিকেট’। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের কাজ ওরা করুক। আমাদের কাজ আমরা করব। দুর্নীতি নিয়ে অনেক কিছু বলছে। প্রমাণ থাকতে হবে তো! এখানকার মানুষ সব জানে। মানুষই আমার সার্টিফিকেট।’’

    শুক্রবার সকালে কলকাতার ১০টি জায়গায় হানা দিয়েছে ইডি। পুর নিয়োগ দুর্নীতি ছাড়াও ব্যাঙ্ক প্রতারণার একটি মামলায় এই তল্লাশি অভিযান। ইডি গিয়েছে ঠনঠনিয়া, শরৎ বোস রোড, নিউ আলিপুরের কিছু ঠিকানায়। এ ছাড়া, বেলেঘাটায় এক চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং নাগেরবাজারে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি চলছে বলে খবর।

    পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এর আগে এক বার ইডি সুজিতের বাড়িতে হানা দিয়েছিল। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তারা গিয়েছিল লেকটাউনে সুজিতের দু’টি বাড়ি এবং এক দফতরে। টানা ১৪ ঘণ্টা তল্লাশির পর কিছু নথি তাঁরা বাজেয়াপ্ত করেন। নিয়ে যান সুজিতের মোবাইল ফোনটিও। সে বার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দমকলমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘যদি কাজের জন্য কেউ সুজিতকে এক টাকা দিয়ে থাকেন, সুজিত আজই মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র দেবে।’’ ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে ইডির হানাকে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করলেন সুজিত।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)