প্রতিবারের মতো এ বছরও তাইওয়ান ১০ অক্টোবর তাদের ‘ন্যাশনাল ডে’ বা জাতীয় দিবস ঘটা করে উদ্যাপন করল। পূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটির ক্যালেন্ডারে এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণদিন। ভোরবেলা কুচকাওয়াজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি জাতীয় ছুটির দিনহিসেবে পালন করা হয়। সকাল থেকেতাইওয়ানের রাজধানী তাইপেইয়ের প্রেসিডেন্ট ভবন চত্বরে সাজোসাজো রব লেগে থাকে। সেখানে তাইওয়ানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষজনের উপস্থিতি ছাড়াও দ্বীপরাষ্ট্রটির বিভিন্ন বন্ধুদেশ থেকে আগত অতিথিদের সমাগম হয়ে থাকে। এ বছরও তার কোনও ব্যতিক্রম ছিল না।
তাইপেই নিবাসী তারকেশ্বরের তরুণ শান্তনু শাসমলের কাছে এই দিনটির অন্য একটি তাৎপর্য রয়েছে। ১০ই অক্টোবর তাঁর জন্মদিন। কিন্তু গত ১০ বছরের মতো এ বছরও তিনি জন্মদিনে ছুটি নিতে পারেননি। নিজের জন্মদিনে বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার খাওয়ার পরিবর্তে এ বছরও তাঁর দায়িত্ব ছিল তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-দা দ্বারা আয়োজিত বিশেষ নৈশাহারে প্রায় কয়েকশো অতিথির জন্যে দই ফুচকা, বিরিয়ানি ও বাটারচিকেনের মতো জিভে জল আনাভারতীয় খাবার রান্না করা। “জন্মদিনে ছুটি না-পাওয়ার জন্য আমার কোনও ক্ষোভ নেই”, সহাস্যে বললেন শান্তনু।
তাইপেইয়ের এক বহুজাতিক পাঁচতারা হোটেলের ‘স্যু শেফ’ বা দ্বিতীয় প্রধান পাচক তিনি। সেই সূত্রেই গত ১০ বছর ধরে বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে হেঁশেল সামলেছেন শান্তনু। এবং গণ্যমান্য অতিথিদের ভারতীয় খাবারের স্বাদ আস্বাদন করিয়েছেন। সেই সূচিতে তাইওয়ানের কিছু বন্ধু-দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরাও রয়েছেন। ভারত সরকার দ্বারা পরিচালিত ‘ইন্ডিয়া তাইপেই অ্যাসোসিয়েশন’ আয়োজিত বার্ষিক প্রজাতন্ত্র দিবসের বিশেষ নৈশাহারেও তিনি ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের একাধিক পদসমৃদ্ধ বুফে রন্ধনের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেখানে ফুচকা বানিয়ে অতিথিদের পরিবেশন করেছিলেন তিনি। তাইওয়ানের জাতীয় দিবসের প্রেসিডেন্টের নৈশাহারেও তিনি দই ফুচকা বানিয়েছিলেন। এবং প্রেসিডেন্ট লাই চিং-দা খুব উৎসাহ নিয়ে সেই ফুচকা খেয়েছিলেন, জানালেন শান্তনু।