• ‘ফটো তুলে পালিয়ে গেছে’, উত্তরবঙ্গে দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপি ও কেন্দ্রকে এক হাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা। রবিবার থেকে উত্তরবঙ্গে আছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রাণ বিলির পাশাপাশি বন্যা-বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন। বিপর্যয়ে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মিরিক। মঙ্গলবার প্রথমে মিরিক পরিদর্শন করেন মমতা। মিরিকের দুর্যোগ কবলিত এলাকা ঘুরে সুখিয়াপোখরিতে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপ দাগেন তিনি। বিজেপি নেতাদের নিশানা করে বলেন, ‘একদিন ঘুরে ফটো তুলে পালিয়ে গিয়েছেন, বাড়ি বানাব আমরা, ব্রিজ বানাব আমরা, ল্যান্ডস্লাইড পরিষ্কার করব আমরা, রিলিফ দেব আমরা, কিচেন চালাব আমরা। সেন্ট্রালের কোনও ভূমিকা নেই, নাথিং ইজ দেয়ার।‘

    তিনি আরও বলেন, ‘কেউ কেউ ধুপগুড়ি, ময়নাগুড়ি নিয়ে রাজনীতি করছেন। সেখানে তিনবার রিলিফ দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ মানুষকে হতাশ করেছেন। তাঁরা এ কাজ না করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। তাঁদের সাহায্য করুন। ব্যবসা করবেন করুন। কিন্তু তার পরেও একটা দায় থেকেই যায় মানুষের জন্য। কোনও কিছু করবেন না, আর বিজেপির টাকায় বড় বড় ভাষণ দেবেন।’ মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানো কর্তব্য, দায়বদ্ধতা। মানুষের পাশে সবসময় থাকার বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী।

    মঙ্গলবার তিনি মিরিকের একাংশ ঘুরে দেখেন। প্রথমে ওই এলাকায় ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করেন । ধসের কারণে পাহাড়ে ভেঙে পড়া বাড়ি, স্কুল, প্রশাসনিক ভবন দ্রুত মেরামত করার নির্দেশ দেন আধিকারিকদের। এরপর তিনি একটি ত্রাণশিবিরে যান। ত্রাণশিবিরে বন্যাদুর্গতদের সঙ্গে দেখা করেন। তারপর তিনি যান মিরিকের সুখিয়াপোখরির বিডিও দফতরে। সেখানে দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    মিরিকের প্রায় সব রাস্তা থেকেই ধস সরানো হয়েছে বলে পর্যালোচনা বৈঠকে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই কাজের জন্য রাজ্যের পূর্ত দপ্তর, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে ধন্যবাদ জানান তিনি। ভারী বৃষ্টিতে মিরিক যাওয়ার পথে যেখানে সেতু ভেঙে গিয়েছিল, সেখানে অস্থায়ী সেতু তৈরি করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার তিনি জানান, অস্থায়ী সেতু সাত-আট দিনের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে। তারপর পাকা সেতু তৈরি করে দেওয়া হবে।

    নতুন নথিপত্র তৈরি করিয়ে দিতে ত্রাণশিবিরেই বিশেষ ক্যাম্প তৈরি করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার ওই ক্যাম্পে যান মুখ্যমন্ত্রী। ওই ক্যাম্পের পাশেই রয়েছে চিকিৎসার ক্যাম্প। সেখানেও যান তিনি। মিরিকের ত্রাণশিবিরে মহিলাদের কক্ষেও যান। সবাই ঠিক মতো ত্রাণ পাচ্ছেন কি না জানতে চান। ত্রাণশিবিরে কয়েক জন শিশু মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তাদের আঁকা ছবি তুলে দেয়। মুখ্যমন্ত্রী তাদের চকোলেট,  খেলনা, আঁকার খাতা এবং পেন্সিল দেন।

    সুখিয়াপোখরির ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামতির জন্য এলাকার বাসিন্দাদের হাতে ১ লক্ষ টাকা তুলে দেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন,  দুর্যোগে সুখিয়াপোখরিতে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। পাশাপাশি দ্রুত অস্থায়ী ব্রিজ তৈরির আশ্বাস দেন। আগামিকাল অর্থাৎ বুধে রিভিউ মিটিং হবে বলে খবর।  উল্লেখ্য, রবিবার বিকেলেই উত্তরবঙ্গে পৌঁছেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দিনভর নাগরাকাটার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের পর মঙ্গলবার মিরিক ও সুখিয়াপোখরি পরিদর্শন করেন।



     
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)