নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: এবার দুর্গাপুজোর মরশুমে লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে হাওড়ার মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছিল। পুজোর আগের সপ্তাহেও বাজার ছিল প্রায় ফাঁকা। মহাজনের দেনা মেটানো নিয়ে সংকটে পড়েছিলেন অনেকেই। তবে দীপাবলির আগে হাসি ফুটেছে হাটের ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের মুখে। ছটপুজো ও ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে চলতি সপ্তাহে ভিন রাজ্যের পাইকারি ব্যবসায়ীরা ভিড় জমিয়েছেন হাওড়া ময়দান সংলগ্ন এশিয়ার অন্যতম বড় কাপড়ের বাজারে। গত তিন মাসের তুলনায় বেচাকেনা বেড়েছে বলে জানালেন বিক্রেতারা।
সামনেই ভাইফোঁটা। এরপরেই ছটপুজো। উৎসব উপলক্ষ্যে মূলত ভিন রাজ্যের ব্যবসায়ীরাই সবথেকে বেশি মঙ্গলহাটে সামগ্রী তুলতে আসেন। এবছর পুজোর বাজার মন্দা যাওয়ায় ভাইফোঁটায় কী হবে, তা নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু চলতি সপ্তাহে ওড়িশা, বিহার থেকে বহু পাইকারি ব্যবসায়ী কাপড় কিনতে মঙ্গলাহাটে এসেছেন। মূলত ওড়িশার ভুবনেশ্বর, কটক থেকে সবথেকে বেশি সংখ্যায় এসেছিলেন তাঁরা। ছটপুজোর জন্য বড় অঙ্কের বরাতও দিয়ে গিয়েছেন অনেকে। পাশাপাশি এরাজ্যের দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান থেকেও সোম ও মঙ্গলবার প্রচুর ব্যবসায়ী নিজেদের দোকানের জন্য রেডিমেড কাপড় কিনতে এসেছিলেন এখানে। এছাড়াও স্থানীয় খুচরো খরিদ্দারদের ভিড় তো ছিলই। জমজমাটি ভিড়ে রীতিমত খুশি মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অনেকেই বলেন, ‘পুজোর বাজার যেভাবে মার খেয়েছে, তাতে লোকসান কীভাবে মেটাব, বুঝতে পারছিলাম না। তবে এখন ভিড় বাড়ছে। আগামী সপ্তাহেও ছটপুজো উপলক্ষ্যে জেলার অনেক খরিদ্দার আসবেন।’
সমবায়িকা হাট, নবীন হাট, মঙ্গলা হাট, ফ্যান্সি হাট, মডার্ন হাট, পোড়াহাটের পাশাপাশি ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসা বিক্রেতা মিলিয়ে লক্ষাধিক ব্যবসায়ী রয়েছেন মঙ্গলাহাটে। অন্যান্য বছর পুজোর আগে একেক সপ্তাহে প্রতিটি হাট থেকে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার কেনাবেচা হয়েছে। কিন্তু এবছর দুর্গাপুজোর বাজার প্রায় ৭০ শতাংশ লোকসানের মুখে ফেলে দিয়েছে ব্যবসায়ীদের। মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সমিতির (সেন্ট্রাল) সভাপতি মলয় দত্ত বলেন, ‘দুর্গাপুজোর সময় মাঝারি ও ছোট ব্যবসায়ীরা সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে ছটপুজো ও ভাইফোঁটার বাজারে সেই ক্ষতি প্রায় ৩০ শতাংশ মেটানো গিয়েছে। রবি থেকে মঙ্গল পর্যন্ত প্রায় ১২ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে।’