সঞ্জয় রাজবংশী: সাপ দেখলেই বেশির ভাগ মানুষ ভয় পায়, বিশেষ করে মহিলারা টিকটিকি ও আরশোলাকে দেখলেই ভয়ে দৌড় দেন। কিন্তু সব মেয়েরা সমান হয় না, যেমন কালনার দূর্গা বারিক, নিজের জীবনের পরোয়া না করেই বিষধর সাপ ধরতে শুরু করেছেন, এখনও পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি সাপ ধরেছেন দূর্গা।
অনেক সচেতনতার বার্তা দিলেও নিজেরা ও পরিজনদের বাঁচাতে সাপকে মেরে ফেলেন অনেকেই, অভিযোগ করা হয় হাজার বার জানালেও বন দফতরের টনক নড়েনা। তাই পৃথিবীর ভারসাম্য বজায় রাখতে, মানুষ ও সাপকে বাঁচাতে নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে নিজেদের ঝুঁকি নিয়ে সাপ ধরছেন কালনা শহরের বালির বাজারে বসবাসকারী অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী শিবেন্দ্রনাথ সরকার ও দূর্গা বারিক।
এই মুহূর্তে কয়েক হাজারের বেশি সাপের জীবন বাঁচিয়েছেন তারা। ভরা বর্ষা চলাকালীন বিষধর সাপ নিজের জীবন বাঁচাতে গ্রামের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। সাপের ছোবলে কালনা মহকুমা জুড়ে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন, গ্রামে বাড়িতে সাপ ঢুকলেই শুধু বাড়ির লোক নয়, গোটা গ্রামের ও পাড়ার লোকেরা আতঙ্কে সিটিয়ে যায়।
বন দফতকে বারংবার বার জানিয়েও তেমন সাড়া পাওয়া যায় না, তার ফলে সাপকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন, মানুষ ও সাপকে বাঁচাতে প্রশিক্ষণ ছাড়াই নিজের সাহসে সাপ ধরতে শুরু করেন শিবেন্দ্রনাথ বাবু। আজ পর্যন্ত কয়েক হাজার সাপের প্রাণ বাঁচিয়েছেন, নিজেদের হাতে সাপ ধরে বন দফতরের হাতে তুলে দিয়েছেন।
কিন্তু হঠাৎ বন দফতর শিবেনবাবুকে সাপ ধরতে নিষেধ করে দেন। কালনার দুইটি গ্রামে এক মাসের মধ্যে দুইটি বাড়িতে সাপ ঢুকে পড়ে, সাপ ধরতে বন দফতর ও শিবেনবাবুকে বার বার জানালেও তারা আসেননি। যার জন্যে দুইটি বাচ্চা মেয়ে সাপের ছোবলে প্রাণ হারায়।
এই যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে পাড়ার মেয়ে দূর্গা বারিককে নিয়ে বন দফতরের নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা না করেই ফের সাপ ধরতে শুরু করে দেন শিবেনবাবু। তবে এখন সমস্যায় পড়েছেন বয়ামে রাখতে হচ্ছে সাপ। বেশ কয়েকটি বিষধর সাপ নিজেদের হেপাজতে রেখেছেন। বন দফতরক খবরও দিয়েছেন কিন্তু কবে এই সাপগুলো নিয়ে যাবেন তারা সেটাই এখন দেখার।