সিনেমার চিত্রনাট্যও হার মানে! প্রেমিকাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ৪৮ বছর পর অবশেষে জালে সত্তরোর্ধ্ব প্রেমিক!...
আজকাল | ১৬ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: একেবারে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও যেন হার মানায়! প্রেমিকার উপর ছুরি নিয়ে হামলার অভিযোগে প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। অবশেষে, দীর্ঘ ৪৮ বছর পর এক অভিযুক্তকে জালে ফেলল মুম্বইয়ের কোলাবা থানার পুলিশ। খবর অনুযায়ী, ১৯৭৭ সালে এক খুনের চেষ্টার মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন ওই ব্যক্তি৷ সম্প্রতি রত্নগিরি জেলার ডাপোলি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তকে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম চন্দ্রশেখর মধুকর কালেকর, বয়স ৭১। ঘটনার সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৩।পুলিশ সূত্রে খবর, ১৯৭৭ সালে প্রেমিকার বিশ্বাসঘাতকতার সন্দেহে কোলাবা এলাকায় তাঁর উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালান কালেকর। সেই সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলেও, পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। কিন্তু তারপর থেকে আর কখনও আদালতের দরজায় পা রাখেননি।
কোলাবা থানার এক বরিষ্ঠ আধিকারিক বলেন, "জামিন পাওয়ার পরেই তিনি আদালতে হাজিরা দেওয়া বন্ধ করে দেন। বছরের পর বছর ধরে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ওয়ারেন্ট জারি হয় এবং অবশেষে তাঁকে পলাতক অপরাধী হিসাবে ঘোষণা করা হয়। আমরা দশকের পর দশক ধরে তাঁর খোঁজ চালাচ্ছিলাম।"
লালবাগের হাজি কাসম এলাকার বাসিন্দা কালেকর এলাকা পুনর্নির্মাণের পর সেখান থেকে অন্যত্র চলে গেলে তদন্তের সুতো ছিঁড়ে যায়। প্রায় ছয় মাস আগে কোলাবা পুলিশ নতুন করে এই মামলার তদন্ত শুরু করে। আধিকারিকরা তাঁর পুরনো ঠিকানায় গিয়ে দেখেন, সেখানে ছোট ছোট ঘর বাড়ির বদলে মাথা তুলেছে নতুন ইমারত। মুম্বইয়ের বিভিন্ন প্রান্তে চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়, ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে সরকারি নথি- সব খতিয়ে দেখা হয়, কিন্তু কোথাও তাঁর নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তদন্তকারী ওই আধিকারিক আরও জানান, "কোনও নির্বাচনী তথ্যেই তাঁর হদিস মিলছিল না। তখন আমরা আদালতের পুরনো নথি এবং পরিবহণ দপ্তরের ডেটাবেস ঘাঁটতে শুরু করি। ঠিক তখনই ২০১৫ সালে ডাপোলি থানায় তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া একটি মামলার সন্ধান মেলে। পথচলতি এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগে মামলাটি দায়ের হয়েছিল।"
ডাপোলির ওই ঠিকানায় কালেকর এখনও থাকেন কি না, তা নিয়ে পুলিশ নিশ্চিত না থাকলেও, সোমবার গভীর রাতে সেখানে হানা দেয় পুলিশের একটি দল। এবং অবাক হয়ে তাঁরা সেখানেই অভিযুক্তকে পেয়ে যান। আধিকারিক বলেন, "৪৮ বছর পর দরজায় পুলিশ দেখে তিনি হতবাক হয়ে যান। তিনি প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন এই মামলার কথা।"
ঘটনার সময় ২৩ বছরের যুবক থাকলেও, এখন তাঁর বয়স ৭১। চেহারায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। পুলিশ জানায়, "আমাদের কাছে থাকা দশক পুরনো ছবির সঙ্গে তাঁর বর্তমান চেহারার মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন।" পরবর্তীতে কালেকরকে আদালতে তোলা হয় ও পরে তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।