আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বুধবার ভারতীয় জনতা পার্টি তাদের দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় আরও ১২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে নজরকাড়া নাম জনপ্রিয় লোকগায়িকা মৈথিলী ঠাকুর। তিনি প্রথমবারের মতো রাজনীতিতে পা রাখছেন এবং দল তাকে দ্বারভাঙা জেলার আলিনগর আসন থেকে প্রার্থী করেছে।
মঙ্গলবারই মৈথিলী ঠাকুর পাটনায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ জয়সওয়ালের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেন। তার যোগদানের পর থেকেই জোর জল্পনা চলছিল যে, তিনি আলিনগর থেকেই লড়াই করবেন। বর্তমানে এই আসনটি বিজেপিরই মিশ্রিলাল যাদবের দখলে রয়েছে।মৈথিলী ঠাকুর ছাড়াও বিজেপি প্রাক্তন আইপিএস অফিসার আনন্দ মিশ্রকে প্রার্থী করেছে। মিশ্র সম্প্রতি প্রশান্ত কিশোরের ‘জন সুরাজ’ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এছাড়া দলের তালিকায় আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম রয়েছে— রঞ্জন কুমার (মুজফ্ফরপুর), যিনি বর্তমান বিধায়ক সুরেশ শর্মার পরিবর্তে লড়বেন, রাম চন্দ্র প্রসাদ (হায়াঘাট), সুভাষ সিং (গোপালগঞ্জ) এবং ছোটি কুমারী (বানিয়াপুর)। দলটি আরও ছাপরা, সোনেপুর, রোসেরা (অনু), বারহ, শাহপুর ও আগিয়াঁও (অনু) আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
এই দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশের পর পর্যন্ত বিজেপি মোট ৮৩টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রথম তালিকায় ৭১ জনের নাম ছিল, যেখানে উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী ও বিজয় সিনহা, পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ নেতা রাম কৃপাল যাদব, তারকেশ্বর প্রসাদ ও মঙ্গল পাণ্ডের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল।এদিকে, জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ)-এর মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। দুই পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনের জন্য এনডিএর আসন ভাগাভাগির চূড়ান্ত রূপরেখা অনুযায়ী, বিজেপি ও জনতা দল (ইউনাইটেড) উভয়েই ১০১টি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসওয়ানের নেতৃত্বাধীন লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) পেয়েছে ২৯টি আসন, আর রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা (আরএলএম) ও হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (এইচএএম) – প্রত্যেকে ছয়টি করে আসন পেয়েছে।
তবে, এই ভাগাভাগি নিয়ে জোটের ভেতরে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। জেডিইউ অভিযোগ করেছে যে, তাদের ভাগের কয়েকটি আসন পাসওয়ানের দলে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে সোনবরসা, রাজগির, একমা ও মোরওয়া আসন ছাড়তে রাজি হয়নি তারা এবং শেষ পর্যন্ত নিজেদের প্রার্থীই দিয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, জেডিইউ কেবল দুটি আসন — তারাপুর ও তেঘরা — ছেড়েছে এবং বিনিময়ে বিজেপির কাহালগাঁও আসন পেয়েছে।অন্যদিকে, পাসওয়ানের দলকেও বেশ কিছু “ক্রিম সিট” থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে। বিজেপি দানাপুর, লালগঞ্জ, হিশুয়া ও আরওয়াল আসন নিজেই রেখে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এলজেপি (আরভি)-কে বিজেপি দুটি আসন দিয়েছে — গোবিন্দগঞ্জ ও ব্রহ্মপুর, যেখানে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন হুলাস পাণ্ডে।
এদিকে, আরএলএম প্রধান উপেন্দ্র কুশওয়াহা ক্ষুব্ধ হয়েছেন, কারণ তার দলের ভাগ থেকে মহুয়া আসন পাসওয়ানের দলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবাদস্বরূপ তিনি তার দলের কোনও প্রার্থীকে নির্বাচনী প্রতীক দেননি এবং জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। অপরদিকে, এইচএএম প্রধান জিতন রাম মাঝি ইতিমধ্যেই তার সব প্রার্থীকে প্রতীক বণ্টন শেষ করেছেন, আর জেডিইউ আনুষ্ঠানিক তালিকা প্রকাশের আগেই ৭০ জনেরও বেশি প্রার্থীকে প্রতীক দিয়েছে।
বিহার বিধানসভার মোট ২৪৩টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে দুই ধাপে — ৬ নভেম্বর ও ১১ নভেম্বর। ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর।