বুনো দাঁতালের সঙ্গে ‘দাদাগিরি’! লেজ ধরে টান, ছোড়া হল পাথরও, মেদিনীপুরের ভাইরাল ভিডিওয় নিন্দার ঝড়...
আজকাল | ১৬ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: এ কেমন অসভ্যতা! নিছক মজার ছলে এক বুনো হাতির লেজ ধরে টানছে এক যুবক। শুধু তাই নয়, হাতির পালকে লক্ষ্য করে অবিরাম ছোড়া হচ্ছে পাথর। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের এমনই এক নৃশংস ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে নেটমাধ্যমে, যা দেখে শিউরে উঠেছেন পশুপ্রেমীরা। ভিডিওটি ভাইরাল হতেই এই পাশবিক আচরণ নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই ঘটনা আবারও মানুষ-বন্যপ্রাণ সংঘাতের উদ্বেগজনক ছবিটাকে সামনে নিয়ে এল।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, জঙ্গল লাগোয়া একটি গ্রামে ঢুকে পড়া একদল হাতির খুব কাছে বিপজ্জনকভাবে জটলা করে দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যেই এক যুবক, সম্ভবত নিছক মজা বা নেটমাধ্যমে বাহবা কুড়োনোর লোভে, একটি হাতির পিছনে গিয়ে আচমকা তার লেজ ধরে সজোরে টান মারেন। অতর্কিত আক্রমণে হাতিটি চমকে গিয়ে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলে, ওই যুবককে হাসতে হাসতে পিছিয়ে আসতে দেখা যায়। ভিডিওর অন্য একটি অংশে, হাতির পালটিকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তেও দেখা যায়, যা বুনো হাতিদের স্পষ্টতই আরও উত্তেজিত করে তোলে।
ইনস্টাগ্রামে ভিডিওটির সঙ্গে একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, “এক দল মানুষ নিছক মজার জন্য হাতির দিকে পাথর ছুড়ছে এবং লেজ ধরে টানছে! এই বিশৃঙ্খলা পুরোপুরি মানুষের তৈরি। বলুন তো- এখানে আসল পশু কে? ওই বিশাল প্রাণীগুলো... নাকি পশুর মতো আচরণ করা মানুষগুলো?”
উল্লেখ্য, ভারতের বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, যে কোনও বন্যপ্রাণীকে বিরক্ত করা বা উত্যক্ত করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নেটমাধ্যম ব্যবহারকারীরা এই ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন, যাতে ভবিষ্যতে এমন বেপরোয়া এবং অমানবিক আচরণের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
এক জন নেটিজেন লিখেছেন, “এটা খুবই দুঃখজনক... এই লোকেরা সম্ভবত হাতির স্মরণশক্তির বিষয়ে অবগত নয়। হাতি খারাপ স্মৃতি সহজে ভোলে না এবং ভবিষ্যতে ওই একই মানুষের সংস্পর্শে এলে সে তাকে ছেড়ে কথা বলবে না।” অন্য এক জনের মন্তব্য, “দুঃখের বিষয় যে, মানুষ পশুদের কেবল ভোগের সামগ্রী বা খেলার বস্তু হিসেবেই দেখে, তাই তাদের থেকে সহানুভূতি আশা করা যায় না।” আর এক জন যোগ করেছেন, “হাতিটি অনেক বেশি সহনশীল, সভ্য এবং দয়ালু ছিল, তাই ওই লোকটিকে পিষে মারেনি বা শূন্যে ছুড়ে ফেলে দেয়নি।”
স্থানীয়দের মতে, অরণ্যভূমি সঙ্কুচিত হওয়া এবং বন্যপ্রাণীর স্বাভাবিক বাসস্থানে মানুষের অনুপ্রবেশের কারণে সম্প্রতি এই অঞ্চলে হাতির আনাগোনা বেড়েছে। এর ফলে প্রায়শই মানুষ ও হাতির মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।