মনোজ মণ্ডল: গোবরডাঙা থানার তৎপরতায় ৭২ বছরের বৃদ্ধা ২৫ লক্ষ টাকার সাইবার প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেলেন। পুলসের ভূমিকায় ভীষণ খুশি ভারতী দেবী। চলতি মাসের ১৪ অক্টোবর গোবরডাঙা থানার দ্রুত পদক্ষেপে এক চাঞ্চল্যকর সাইবার প্রতারণার ঘটনা রোধ করা সম্ভব হল।
গোবরডাঙা খাঁটুরার বাসিন্দা ৭২ বছরের ভারতী নন্দী প্রায় পঁচিশ লক্ষ টাকার সাইবার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ব্যাংক কর্মীদের সতর্কতা ও পুলিসের তৎপরতার ফলে শেষমেশ প্রতারিত হওয়ার হাত থেকে তিনি রক্ষা পান।
প্রায় তিন মাস আগে গোবরডাঙা থানার পক্ষ থেকে স্থানীয় বিভিন্ন ব্যাংক আধিকারিকদের নিয়ে একটি সমন্বয় সভা করা হয়েছিল, যেখানে সন্দেহজনক লেনদেনের ক্ষেত্রে পুলিসকে দ্রুত জানানো ও বিশেষ করে বয়স্ক ও অবসরপ্রাপ্ত নাগরিকদের সাইবার প্রতারণা থেকে রক্ষা করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ ব্যাংকে উপস্থিত কর্মীরা লক্ষ্য করেন, ভারতী নন্দী নামে এক প্রবীণ মহিলা প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা অন্য একটি অ্যাকাউন্টে পাঠানোর চেষ্টা করছেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় ব্যাংক কর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে গোবরডাঙা থানার ওসিকে জানান। এরপর পুলিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বৃদ্ধাকে বিষয়টি বুঝিয়ে সাইবার প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করেন।
তদন্তে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ ভারতী নন্দীর মোবাইলে এক অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। নিজেকে দিল্লি সাইবার পুলিস পরিচয় দিয়ে প্রতারক জানান যে, তাঁর নামে নিবন্ধিত একটি সিম কার্ড অবৈধ কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে প্রতারক প্রথমে ২ লক্ষ টাকা দাবি করে, যা বৃদ্ধা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন।
এরপর পুনরায় ভিডিয়ো কলে ভয় দেখিয়ে প্রতারকরা আরও টাকা দাবি করে। পুলিসের হস্তক্ষেপে এবার প্রতারণার দ্বিতীয় ধাপ ব্যর্থ হয়। গোবরডাঙা থানায় ইতিমধ্যেই একটি FIR দায়ের হয়েছে এবং সাইবার ক্রাইম পোর্টালে অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। পুলিস দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
বুধবার দুপুরে গোবরডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ভারতী দেবীকে পাশে বসিয়ে গোটা বিষয়টি সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে তুলে ধরেন। শুধু গোবরডাঙ্গার মানুষ নয় এই ধরনের প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে সবাইকে সচেতনতামূলক বার্তা দিলেন। আগামী দিনে এলাকার বয়স্কদের এবং অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীদের নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মশালা করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।