সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাউকে বলার দরকার নেই, জামাকাপড় বদলে স্নান করে নাও! গণধর্ষণ থেকে কোনওমতে বেঁচে ফেরা ছাত্রীকে এমনটাই নির্দেশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পুলিশে খবর দেওয়া বা ডাক্তারি পরীক্ষা করানো তো দূর, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, গোটা বিষয়টিকে গুরুত্বই দিতে চায়নি। বয়ানে এমনটাই জানিয়েছেন ওই নির্যাতিতা।
বিদেশমন্ত্রকের অধীনস্থ দিল্লির আন্তর্জাতিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ুয়াকে গণধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ঘিরে উত্তাল গোটা দেশ। নির্যাতিতা দিল্লির একটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসের মধ্যেই চার যুবক তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ছিঁড়ে দেয় তাঁর জামা। গোপনাঙ্গে স্পর্শ করেছে তারা। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দুপুর ৩টে নাগাদ ময়দান গাঢ়হি থানায় একটি পিসিআর কল আসে। তারপরই পুলিশের একটি দল পাঠানো হয় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়ার পর শ্লীলতাহানি ও যৌন হেনস্তার অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলার পর গণধর্ষণের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কিন্তু পরে এফআইআরে আরও বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রে খবর, এফআইআরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নির্যাতিতা। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, গণধর্ষণ থেকে কোনওমতে বেঁচে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল ইনচার্জের কাছে যান। কিন্তু ইনচার্জ বিষয়টিকে গুরুত্বই দেননি। নির্যাতিতা ওই অবস্থাতেই মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে চেয়েছিলেন, সেই সময়ে ইনচার্জ বাধা দেন।
এমনকী গোটা ঘটনা চেপে যাওয়ার নিদানও দিয়েছিলেন ওই হস্টেল ইনচার্জ। নির্যাতিতা জানিয়েছেন, তাঁকে বলা হয় তিনি যেন এই অভিযোগ ভুলে যান। গোটা ঘটনা নিয়ে কাউকে কিছু না বলেন। বরং স্নান করে জামাকাপড় পালটে ফেলতে নির্দেশ দেন ইনচার্জ। শেষ পর্যন্ত নির্যাতিতার এক বন্ধু পুলিশে ফোন করে বিষয়টি জানান। ক্যাম্পাসে পুলিশ গিয়ে নির্যাতিতাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাঁর শারীরিক পরীক্ষা এবং কাউন্সেলিংয়ের পর বয়ান রেকর্ড করে পুলিশ। প্রশ্ন উঠছে, সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির চুক্তিতে তৈরি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটবে কেন? কেনই বা হস্টেল ইনচার্জ গোটা বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হবেন না?