সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উৎসবের মরশুমে উত্তরবঙ্গের যাচ্ছেতাই দশা। প্লাবিত হয় একের পর এক এলাকা। প্লাবন পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আরও একবার ডিভিসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেচদপ্তরের ভূমিকাতেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
আপাতত উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দার্জিলিংয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ডিভিসিকে একহাত নেন। বলেন, “প্রকৃতিকে নিয়ে খেলা যায় না। নদীকে নিজের মতো বইতে দিতে হয়। হয় ড্রেজিং করো, নয়তো বাঁধ ভেঙে দাও।” ভুটান থেকে নেমে আসা জলে উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। সেই অভিযোগ আগেই করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে। ত্রাণ তহবিল ইতিমধ্যেই খোলা হয়েছে। সেই কথা আবারও জানিয়েছেন মমতা। ভুটান প্রশাসনের উত্তরবঙ্গের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে ত্রাণের বন্দোবস্ত করা উচিত বলেও দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি বলেন, “যে-ই যাক, ওদের বাঁধের জল যাতে এখানে ঢুকে বাংলার ক্ষতি করতে না পারে, তার একটা ব্যবস্থা করতে হবে। কেন বারবার আমরাই ভুক্তভোগী হব? বাংলার সদস্য থাকতে হবে বৈঠকে। যে-ই বৈঠকে যাক বলতে হবে ওদেরও ক্ষতিপূরণ দিতে।” বলে রাখা ভালো, আগামী ১৬ অক্টোবর কেন্দ্র এই বিষয়ে একটি বৈঠক ডেকেছে।
রাজ্যের সেচদপ্তরের দায়িত্ব সামলান মানস ভুঁইয়া। তাঁর দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “সেচদপ্তর কাজটা ঠিক মতো করতে পারছে না। সেচদপ্তর যা করবে, পূর্তদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শ করে করতে হবে। ম্যানগ্রোভ লাগানোর কাজে হাত দিতে হবে বনদপ্তরকে।” উল্লেখ্য, দার্জিলিংয়ের মিরিক-সহ একাধিক জায়গা ধসে বিপর্যস্ত। বহু রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ চলছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিপর্যয়ে ৭০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। উত্তরবঙ্গে মোট ৩২ জন মানুষ এই বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। বৃষ্টি-ধস, ও হড়পা বান ভাসিয়ে দিয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের একাধিক এলাকা। বিপর্যয়ের পর থেকেই প্রশাসন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেজন্য বহু দুর্গতকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলে মত মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন প্রশাসনের আধিকারিক, কর্মী, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের স্যালুট জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।