সংবাদদাতা কালিয়াচক: মঙ্গলবার গভীর রাতে মালদহ জেলার কালিয়াচক থানার সুজাপুর ডাঙ্গা এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে চারটি বিশাল প্লাস্টিকের গোডাউন ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক অনুমান, এই ঘটনায় কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। রাত প্রায় একটা নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে এবং আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত একের পর এক গোডাউনে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় বাসিন্দারা ইংলিশবাজার দমকল বিভাগে খবর দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় চারটি ইঞ্জিন। কিন্তু প্লাস্টিকের মতো দাহ্য পদার্থ মজুত থাকার কারণে আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল, নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল কর্মীদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। বুধবার সকাল পর্যন্ত দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
সুজাপুরের এই প্লাস্টিক রিসাইকেল কেন্দ্র জেলার অন্যতম বড়। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, চারটি বড় গোডাউন সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এর ফলে বহু শ্রমিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। শর্ট সার্কিট বলে প্রাথমিক অনুমান দমকল বিভাগের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ।
এই বিপুল ক্ষতির পর সামনে এসেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বহুদিনের ক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ, কালিয়াচক-সুজাপুর এলাকায় এখনও পর্যন্ত কোনও দমকল কেন্দ্র না হওয়ায় বারবার এমন বড় অগ্নিকাণ্ডে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। সময়মতো ইঞ্জিন পৌঁছতে না পারায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সুলেমান শেখ হতাশ কণ্ঠে বলেন, আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। চারটি গোডাউন পুড়ে ছাই। কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যদি দ্রুত দমকল পরিষেবা পেতাম, তবে এতটা ক্ষতি হতো না।
অন্য এক ব্যবসায়ী আমিনুল শেখের আক্ষেপ, যদি কালিয়াচকে একটি দমকল কেন্দ্র থাকত, তাহলে আগুন লাগার পর দ্রুত নেভানো যেত। সেক্ষেত্রে এত বড় ক্ষতি হতো না। ভোটের সময় নেতারা শুধু প্রতিশ্রুতি দেন, কাজের কাজ কিছুই হয় না।
স্থানীয় প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জারজিস শেখ এবং আলিউল শেখ একই সুরে বলেন, এই শিল্পের উপর হাজার হাজার মানুষের রুজি-রোজগার নির্ভর করে। এত বড় ক্ষতির পর আমরা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াব, জানি না। অবিলম্বে এলাকায় দমকল কেন্দ্র স্থাপন করা হোক।
এপ্রসঙ্গে এক দমকল আধিকারিক বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চারটি ইঞ্জিন নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলাম। গোডাউন প্লাস্টিক ভর্তি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘ সময়ের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ অনেক। নিজস্ব চিত্র।