নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: ‘অয়েস্টার’ ও ‘মিল্কি’ মাশরুম চাষের মাধ্যমে মালদহের চাষিদের নতুন দিশা দেখাচ্ছে উদ্যানপালন দপ্তর। মাশরুম বিক্রি করে লক্ষ্মীলাভে খুশি চাষি থেকে শুরু করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। মালদহ জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের উপ অধিকর্তা সামন্ত লায়েক জানান, মাশরুম পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু একটি খাবার। জেলা উদ্যানপালন দপ্তর এনিয়ে চাষিদের সবরকম সাহায্য করছে।
‘স্মল মাশরুম প্রোডাকশন ইউনিট’ তৈরিতে সহায়তা করে রাজ্য সরকার। একটা ইউনিট তৈরি করতে খরচ হয় ৬৬ হাজার ২৫০ টাকা। যার মধ্যে রাজ্য সরকার ৩৩ হাজার ২৫০ টাকা ভর্তুকি দেয়। ক্ষুদ্র বা প্রান্তিক চাষি ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যেই জেলা জুড়ে তৈরি করা হচ্ছে এই ছোট ছোট ইউনিট। উদ্যানপালন দপ্তরের উদ্যোগে তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ায় ব্যবস্থা করা হয়। মাশরুম চাষের এই ছোট ইউনিটগুলির জন্যই স্বাবলম্বী হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে।
মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক উত্তম বসাক জানান, আম, রেশম, মাখনার পর মাশরুম মালদহ জেলাকে এক অন্য দিশা দেখাবে বলে আমরা আশাবাদী।
মালদহ জেলায় মূলত দুই প্রকার মাশরুম চাষ করা হচ্ছে। একটা হল মিল্কি মাশরুম, যা অত্যন্ত জনপ্রিয়। দেখতে দুধের মতো সাদা। আকারে অনেকটা বড়। এর দামও অন্যান্য মাশরুমের থেকে অনেক বেশি। চাষিদের লাভের পরিমাণ এক্ষেত্রে অনেকটা বেশি থাকে। শীতকাল ছাড়া প্রায় সারা বছরই মিল্কি মাশরুম চাষ করা যায়। অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। সাধারণত অভিজ্ঞ চাষিরাই মিল্কি মাশরুম চাষ করেন। এছাড়াও রয়েছে অয়েস্টার মাশরুম। যা মূলত শীতের মরশুমে চাষ করা হয়। অয়েস্টার কম খরচে খুব সহজ এবং স্বল্প সময়ে চাষ করা যায়। ফলে মালদহের অধিকাংশ চাষি এই মাশরুম চাষে বেশি আগ্রহী।
মালদহ জেলায় ইংলিশবাজার, কালিয়াচক-১ এবং ২, পুরাতন মালদহ, গাজোল, চাঁচল-১ ও ২, রতুয়া-১ ব্লকেই মাশরুম বেশি চাষ করা হয়। চাষিরা অয়েস্টার মাশরুম ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি করেন। চাহিদা বেশি থাকলে এর দাম হয় ১৪০ টাকা। সেখানে মিল্কি মাশরুম বিক্রি হয় ২৫০ টাকা কেজি দরে।
সামন্ত লায়েক আরও জানান, আগে মাশরুম নিয়ে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা ছিল। একটা ভয় কাজ করত। এখন উদ্যানপালন দপ্তর সচেতন করার ফলে চাষিদের মাশরুম বিক্রির ক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না।