নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: রানাঘাট শহরের কাছে ছোট্ট জনপদ আড়ংঘাটা। কিন্তু কালীপুজোর মরশুমে থিমের জৌলুসে অনেক বড় শহরকেও টেক্কা দেয় এই এলাকা। প্রায় একডজনের বেশি বিগ বাজেটের কালীপুজো ঘিরে পুরো এলাকা সেজে ওঠে। প্রতিটি পুজোতেই থাকে অভিনব থিম। এবছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। কোথাও একলক্ষ ব্লেড দিয়ে তৈরি প্রতিমা, কোথাও থিম ‘অনন্তের সৃষ্টি’-দর্শনার্থীদের মন জয়ে নানা চমক নিয়ে হাজির পুজো উদ্যোক্তারা।
এলাকার গুরুত্বপূর্ণ থিমপুজোর মধ্যে অন্যতম ‘আড়ংঘাটা ইয়াংস্টার’। গতবছর রজতজয়ন্তী বর্ষে তাঁদের কাচের মণ্ডপ ও প্রতিমা দর্শনার্থীদের তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। এবছর রাজস্থানের আভিজাত্য ও ঐতিহ্য মণ্ডপের থিমে ফুটিয়ে তুলবেন তাঁরা। তবে এই ক্লাবের পুজোর আসল আকর্ষণ তাঁদের প্রতিমা। প্রায় একলক্ষ ধারালো ব্লেড ব্যবহার করে কালীমূর্তি গড়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে ব্লেড দিয়ে ধ্যানরত শিবও গড়া হবে। ২৬তম বর্ষে পুজোর বাজেট প্রায় ৩০লক্ষ টাকা। কমিটির সদস্য রতন রায় বলেন, আড়ংঘাটা পুজোর সৃষ্টিশক্তি ও উপস্থাপনায় যে কোনও বড় শহরের সমান। আমাদের একলাখ ব্লেডের প্রতিমা সেই বার্তাই দেবে। আড়ংঘাটার অপর এক বিগ বাজেটের পুজো আয়োজক ‘হিউম্যান লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন’। ১৭তম বর্ষে তাদের থিম ‘অনন্তের সৃষ্টি’। মণ্ডপে শিল্পের ছোঁয়ায় প্রকৃতি ও অস্তিত্বের আদিম গল্প ফুটিয়ে তোলা হবে। পুজো কমিটির মূল উদ্যোক্তা রাজীব ধর বলেন, প্রতিবছর আমরা নতুন কিছু করার চেষ্টা করি। এবার আমাদের থিম দর্শনার্থীদের এমন এক অনুভূতি দেবে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
এই দু’টি পুজোর কাছেই পিয়াসী ক্লাবের শক্তি আরাধনা। এবছর তাঁদের থিম ‘হারানো শৈশব’। আগেকার দিনের ছোটদের খেলা-যেমন কানামাছি, চোর-পুলিশ, গুলিডান্ডা এসবই দেখা যাবে পুজো মণ্ডপে। এখন যা স্মৃতির পাতায় হারিয়ে গিয়েছে, সেই আবেগের দিনগুলি ফিরিয়ে আনাই তাঁদের উদ্দেশ্য। প্রায় আটলক্ষ টাকার বাজেটে থিম গড়ে তোলা হচ্ছে।
পুজো কমিটির সদস্য বিষ্ণুপদ রায় বলেন, আমাদের শৈশব মানেই ছিল খেলাধুলো, বন্ধুবান্ধব ও মাঠের হাওয়া। এখনকার শৈশব ডিজিটাল। সেই পরিবর্তনের ছবিটাই আমরা মণ্ডপে তুলে ধরেছি। সবমিলিয়ে, ভক্তি ও সৃজনশক্তির এক অপূর্ব মিশেল দেখা যাবে আড়ংঘাটার কালীপুজোয়।