সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: এবার দুর্গাপুর অরবিন্দ স্পোর্টিং ক্লাবের কালীপুজোর থিম ‘কেয়া পাতার নৌকা’। সহজপাঠের কবিতার থিমে সাজছে মণ্ডপ। প্যান্ডেলজুড়ে থাকছে সহজপাঠের সেই পদ্মদিঘি থেকে খুকুর জল আনতে যাওয়া, কেয়া পাতার নৌকা, উড়ন্ত বকের দল সহ সহজ পাঠের নানান দৃশ্য। মণ্ডপের সামনে বিশাল পদ্মপুকুর করা হয়েছে। পেপার কাটিং করে পদ্মফুল, পাখি, কাগজ দিয়ে তৈরি কেয়া পাতার নৌকা তৈরি করা হচ্ছে। মণ্ডপে গড়ে তোলা হয়েছে তিনটি রাজহংস। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছুটি’ ও সহজপাঠ বইয়ের নানান কবিতায় ভরে উঠছে মণ্ডপের অন্দরমহল। মণ্ডপ তৈরি করছেন বিশ্বভারতীর শিল্পীরা।
পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, নব প্রজন্মের শিশুরা ভুলতে বসেছে মাতৃভাষা, তারা জানে না সহজপাঠ বইয়ের মধ্যে রয়েছে কত মজার কবিতা ও ছড়া। ওই কবিতা ও ছড়ার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে শৈশবের খেলা ও আনন্দের গল্প। তাই অভিভাবকদের সহজপাঠের স্মৃতি ফিরিয়ে দিতে ও শিশুদের আকৃষ্ট করতে এবার তাদের এই থিম। যেখানে নৌকার পালে লেখা রয়েছে নানান কবিতার কলি। কোথাও লেখা, ‘মেঘের কোলে রোদ হেসেছে বাদল গেছে টুটি, আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি’। আবার কোথাও লেখা হাট কবিতার সেই বিখ্যাত পংক্তিটি ‘কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি, বোঝাই করা কলসি হাড়ি’। এই মণ্ডপ দর্শন করলে ছেলেবেলার স্মৃতি বিজড়িত এমনই সব কবিতা আবারও মনে পড়বে দর্শনার্থীদের। ফিরে পাবে ছেলেবেলার স্মৃতি। পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদিকা সাহিস্তা খাতুন ও সুতপা ঘোষাল বলেন, এই বছর আমাদের পুজো ৪৪তম বর্ষে পদার্পণ করছে। কালীপুজোর আগের দিনই মণ্ডপের উদ্বোধন হবে। আকর্ষণীয় মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই প্রতিমা থাকবে। সঙ্গে সারদাদেবী ও রামকৃষ্ণের মূর্তি থাকবে। পূর্ব বর্ধমানের শিল্পী রাজু রায় অত্যন্ত পরিশ্রম করে ওই থিম ফুটিয়ে তুলছেন। মণ্ডপ ঘিরে থাকছে অত্যাধুনিক আলোকসজ্জা। বহু বছর ধরে আমরা থিম পুজো করছি। আমরা মহিলারা মিলে পুজোর চাঁদা তোলা, পুজোর বাজার থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ পুজো আর্চনার সমস্ত ব্যবস্থা করে থাকি। পুজোর কয়েকদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এলাকার ছেলেমেয়েদের প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। পুজোকে কেন্দ্র করে ভোগ বিতরণের পাশাপাশি একদিন এলাকাবাসী সকলে মিলে খাওয়াদাওয়ার অনুষ্ঠান হয়।-নিজস্ব চিত্র