• কালীপুজোর আগে বিপুল চাহিদা ব্যস্ততা তুঙ্গে কাঁকসার মোম কারখানায়
    বর্তমান | ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানকর: হাতে মাত্র আর কয়েক দিন। তারপরই আলোর উৎসব দীপাবলি। এই উৎসবে বাহারি সব আলোকসজ্জার সঙ্গে কদর বাড়ে বিভিন্ন শৈলীর মোমবাতিরও। বিপুল চাহিদা মেটাতে এখন নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই কাঁকসার মোমবাতি কারখানার শ্রমিকদের। কলকাতা থেকে মোম, সলতে সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী এনে নির্দিষ্ট ছাঁচে ফেলে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে অগণিত মোমবাতি। সেই মোমবাতি প্যাকেটজাত করে পশ্চিম বর্ধমান জেলাজুড়ে চলছে রপ্তানি। মোমবাতি কারখানায় পাঁচ ইঞ্চি থেকে শুরু করে পাঁচ ফুটেরও মোমবাতি তৈরি হচ্ছে। কাঁকসার মনোজপল্লির কারখানায় এখন জোরকদমে চলছে মোমবাতি তৈরির কাজ। ওই কারখানার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, পুজোর অনেক আগে থেকেই বাড়তি কারিগরদের নিয়ে চলছে মোমবাতি বানানোর কাজ। প্রতিবছরের মতো এবারও দীপাবলির আগে মোমবাতির চাহিদা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন রাত জেগে কাজ করছেন শ্রমিকরা। না হলে চাহিদা অনুযায়ী মোমবাতি পাঠানো যাবে না বাজারে। কারখানার এক কর্মী দীপ ভট্টাচার্য বলেন, কাঁচামালেরও দাম সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। ফলে গতবারের থেকে মোমবাতির দামে বিশেষ হেরফের হচ্ছে না। কীভাবে তৈরি হয় এসব মোমবাতি? কর্মীরা জানান, মাপ অনুযায়ী মোমবাতির আলাদা, আলাদা ছাঁচ আছে। প্রথমে ছাঁচে সুতো পরিয়ে নিতে হয়। তারপর গরম মোম তরল অবস্থায় সেই ছাঁচে ঢালা হয়। নির্দিষ্ট সময় পর ছাঁচ খুলে বের করে নিয়ে আসা হয় মোমবাতি। চার থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার মোমবাতি তৈরি করতে প্রায় সারা দিন লেগে যায়। কেন এত সময় লাগে? কারখানার মালিক লিটন ধরের কথায়, বেশি উচ্চতার মোমবাতির ছাঁচে একেবারে মোম দেওয়া যায় না। সব মোম একবারে দিয়ে দিলে ভিতরটা ফাঁপা হয়ে যাবে। তাই টুলের উপর উঠে একটু একটু করে ছাঁচে তরল মোম ঢালতে হয়। ছাঁচের মোম জমাট বাঁধলে ফের মোম দিতে হয়। বেশি উচ্চতার মোমবাতি তৈরির সময় সতর্ক থাকতে হয়, যাতে গরম মোম গায়ে না পড়ে। এদিন বুদবুদ, কাঁকসা, পানাগড়ের বাজার ঘুরে দেখা গেল, পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে মোমবাতির দাম। আকার ও আয়তন অনুযায়ী দামের হেরফের হয়। পাঁচ ফুটের মোমবাতি টানা তিন দিনের বেশি জ্বলবে বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। বাজারে সবচেয়ে বেশি চাহিদা দশ টাকার ‘কাঠি মোমবাতি’র। 

    বুদবুদ বাজারের বিক্রেতারা জানালেন, সারা বছর কাঠি মোমবাতি বিক্রি হয়। মণ্ডপে পুজো ছাড়াও অনেকে সারা বছর সন্ধ্যায় ধূপের সঙ্গে মোমবাতি জ্বালান। তবে কালীপুজোয় সাধারণ মোমবাতির সঙ্গে এবারও বাজারে এসেছে বিভিন্ন ডিজাইনের প্রদীপ মোমবাতি। যেগুলির দাম ১০ টাকা থেকে শুরু। কাঁকসার একটি কালীপুজোর উদ্যোক্তা শেখর রায় বলেন, দেবীর সামনে মোমবাতি জ্বালানো হয়। দামও হাতের নাগালের মধ্যেই রয়েছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)