• গোপীবল্লভপুরের কুঠিঘাটে বৈষ্ণবমতে পুজো দক্ষিণাকালীর
    বর্তমান | ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের কুঠিঘাটে মা কালী বলি গ্রহণ করেন না। এখানে তন্ত্রমতে নয়, বৈষ্ণবমতে দেবীর পুজো হয়। প্রথা মেনে দেবীকে ১০৮রকম ভোগ দেওয়া হয়। স্থানীয়দের পাশাপাশি ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড থেকেও ভক্তরা এখানে পুজো দিতে আসেন।

    সুবর্ণরেখা নদী-তীরবর্তী কুলিয়ানা পঞ্চায়েতে পড়ে কুঠিঘাটের কালীমন্দির। যার সামনেই সুবর্ণরেখা নদীর সোনালি বালুতট। গোপীবল্লভপুর বৈষ্ণবদের আদি তীর্থভূমি। বৈষ্ণব আন্দোলনের ঢেউ এখান থেকেই জঙ্গলমহলের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল। এখানে বৈষ্ণবমতের গভীর প্রভাব লক্ষ করা যায়। কুঠিঘাটের দক্ষিণাকালীর পুজোয় তাই বলি দেওয়ার নিয়ম নেই। মন্দিরে কষ্ঠিপাথরের বিগ্রহ রয়েছে। ফলমূল, সুজি, পায়েস ও অন্ন সহ দীপান্বিতা অমাবস্যায় দেবীকে ১০৮রকম ভোগ নিবেদন করা হয়।

    দেবী কালীর অন্যতম রূপ হল দক্ষিণাকালী। এই মূর্তিতে দেবীর লাল জিভ রজগুণের প্রতীক। সাদা দাঁত সত্যের প্রতীক। গলার মুণ্ডপালা প্রজ্ঞার বার্তা বহন করে। দক্ষিণেশ্বর, তারাপীঠের মতো বহু জায়গায় তন্ত্রমতে দক্ষিণাকালীর পুজো হয়। কিন্তু কুঠিঘাটে দক্ষিণাকালী ব্যতিক্রমীভাবে বৈষ্ণব আচারে পূজিতা হয়ে আসছেন। এলাকায় বৈষ্ণব আন্দোলনের দীর্ঘ প্রভাবে পুজোর নিয়মে এই বদল বলে মনে করা হয়।

    মন্দির কমিটির অন্যতম সদস্য সত্যব্রত রাউত বলেন, আর্থিক সমস্যায় কালীমন্দির এখনও সংস্কার করা যায়নি। এই এলাকা পর্যটনস্থল হিসেবেও পরিচিত। মন্দিরের কাছে নীলকর সাহেবদের ভগ্ন কুঠি রয়েছে। মন্দিরের পাশ দিয়ে সুবর্ণরেখা নদী বয়ে গিয়েছে। শীতের মরশুমে বহু পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। পর্যটকদের জন্য সরকারি বাংলো আছে। তাই মন্দিরটি সংস্কার করে তীর্থস্থান হিসেবে গড়ে তুললে আরও মানুষের সমাগম হবে। ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা তপতী দে বলেন, শহর থেকে ৩৫কিমি দূরে কুঠিঘাটে মায়ের মন্দির রয়েছে। দীপান্বিতা অমাবস্যায় প্রতিবার পুজো দিতে যাই। দেবীকে ফলমূল অর্ঘ্য প্রদান করি। মা-ই বিপদ থেকে আমাদের রক্ষা করেন।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)